English | Bangla
“যানজট হ্রাসে প্রাইভেট কার নয়, বাসে চড়তে চাই” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচী

যানজট হ্রাসের অতিসত্ত্বর প্রাইভেট কার ব্যবহারে নিরুৎসাহী করতে বাসের যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী। ৯ আগষ্ট ২০০৯ সকাল ১১.০০ টায় জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, সিটিজেন রাইটস্ মুভমেন্ট, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, “প্রত্যাশা” মাদক বিরোধী সংগঠন ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে “যানজট হ্রাসে প্রাইভেট কার নয়, বাসে চড়তে চাই” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচির পালন করা হয়।

বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরে যানজটে সকলেই কম বেশি ভূক্তভোগী। যানজটের জন্য অনেকগুলি কারণের মধ্যে অন্যতম সড়কের তুলনায় গাড়ির আধিক্য। এর জন্য কেউ কেউ বলে থাকেন, সড়ক ও অবকাঠামো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন সড়ক ও অবকাঠামো বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি বৃদ্ধি পাওয়ায় পুনরায় যানজট বৃদ্ধি পায়। এভাবে চক্রাকারে অশেষ যানজটের কবলে গরতে হয়। এ বিষয়ে উদাহরণ হিসেবে সিউলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ভেঙ্গে ফেলার অভিজ্ঞতা তুলে ধরার মাধ্যমে ঢাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা আরো বলেন, যানজট নিরসনে যাতায়াত চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এছাড়া অদক্ষ ও অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত নিরুৎসাহিত করা প্রয়োজন। তারা আরো বলেন, অল্প জায়গায় বেশি যাত্রী পরিবহণ করা যায় সেই ধরনের বাহন ঢাকার জন্য উপযোগী। সেক্ষেত্রে বাসের সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন। ঢাকায় বর্তমানে প্রাইভেট কারের ব্যবহার অত্যধিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। প্রাইভেট কারে চলাচল নিরুৎসাহিত করতে বিকল্প পরিবহণ সুবিধা থাকা প্রয়োজন। অনেকে বাধ্য হয়েই প্রাইভেট কার ব্যবহার করছেন। উন্নত বাস সার্ভিস চালুর মাধ্যমে প্রাইভেট কারের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনা সম্ভব। সেক্ষেত্রে যানজট নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। এর জন্য নগর পরিবহণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা সম্ভব।

বক্তারা বলেন, একটি বাসের সমান যাত্রী পরিবহণ করতে প্রায় ত্রিশটি প্রাইভেট কার প্রয়োজন পড়ছে। এছাড়া প্রাইভেট কার বৃদ্ধির সােেথ সাথে বৈদেশিক মূদ্রার অপচয়, দূষণ, জ্বালানী ব্যয়, দূর্ঘটনা, পরিবহণ খরচ এবং সর্বোপরি যানজট বৃদ্ধি পায়। তাই প্রাইভেট কারের পরিবর্তে মানুষকে বাসে চড়তে উৎসাহী করতে হলে বাস সার্ভিসের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। অন্যন্য পরিবহণের সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকার সর্বত্র বাসে চলাচলের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে হাঁটা, সাইকেল ও রিকশায় চলাচলের সুষ্ঠূ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী।

বক্তারা পর্যাপ্ত বাস, যাত্রী ছাউনী, বাসের জন্য পৃথক লেন এর ব্যবস্থা করা; নগরভিত্তিক বাস আমদানীতে কর কমানো; প্রাইভেট কারের আমদানী কর বৃদ্ধি করা; একদিন বেজোড় সংখ্যা এবং অন্যদিন জোড় সংখ্যার লাইসেন্স অনুযায়ী প্রাইভেট গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা করা; নগরের ব্যস্ততম এলাকায় প্রাইভেট গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে কনজেশন চার্জ গ্রহণ করা; সকল স্থানে পার্কিংয়ের জন্য জায়গা ও সময়ের মূল্যানুসারে পার্কিং ফি গ্রহণ করা; প্রাইভেট কারের লাইসেন্স বরাদ্দ সীমিত করা; শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অফিস আদালতে প্রাইভেট গাড়ির পরিবর্তে পাবলিক পরিবহণের ব্যবস্থা করা; প্রাইভেট কার এর পার্কিং হতে প্রাপ্ত অর্থ পাবলিক পরিবহণের মানোন্নয়নে ব্যয় করার সুপারিশ করা হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সিটিজিন রাউটস্ মুভমেন্টের মহাসচিব তুষার রেহমান, নিরাপদ ডেভেরপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর সভাপতি ইবনুল সাইদ রানা, “প্রত্যাশা” মাদক বিরোধী সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, নগরবাসী’র সভাপতি হাজী আনসার আলী এবং বাউল শিল্পী আব্দুল কুদ্দুস বয়াতী। অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। কর্মসূচি পরিচালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মারুফ রহমান।