English | Bangla
ধানমন্ডি কচিকন্ঠ স্কুলে সুস্থতায় স্কুলে নিরাপদে হেঁটে যাতায়াতের জন্য শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে প্রশিক্ষণ প্রদান

প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে শিশুদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, নিদ্রাহীনতাসহ নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি নেতিবাচক মানসিকতার বহি:প্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন একটি শিশুর জন্য কমপক্ষে এক ঘন্টা শারীরিক পরিশ্রম করা প্রয়োজন। কিন্তু নগরে খেলার মাঠ না থাকা এবং বাসা বাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় শিশুদের প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম হয় না। প্রতিদিন ¯ু‹লে হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে শিশুরা প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম পেতে পারে। এজন্য শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়মিত হেঁটে যাতায়াতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি তারা কিভাবে নিরাপদে হাঁটবে সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। পশ্চিম ধানমন্ডির শংকরে অবস্থিত ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাই স্কুল এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে “হেঁটে যাই বিদ্যালয়, দেহ-মন সুস্থ রয়” শ্লোগানে ”সুস্থতায় স্কুলে হেঁটে যাতায়াতের নিরাপদ পরিবেশ চাই” কর্মসূচির অংশ হিসেবে ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাই স্কুল এর শিক্ষাথীদের মাঝে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রায় দুইশত শিক্ষার্থী এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে।

উক্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের প্রতিটি পর্বে হাঁটার উপকারিতা, প্রতিবন্ধকতা ও তা সমাধানের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। শিক্ষার্থীদেরও হাঁটার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয়ের প্রতি নজর রাখতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন করা হয়। হাঁটার স্বাস্থ্যগত উপাকরিতার পাশাপাশি, পরিবেশ অর্থনীতি এবং সামাজিক বিষয়গুলোও উঠে এসেছে। সেক্ষেত্রে যাতায়াত খরচ, জ্বালানীর উপর নির্ভরশীলতা ও পরিবেশ দূষণ কমানো এবং সামাজিক সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে হাঁটার ভূমিকা সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি রাস্তায় হাঁটার সময় এক প্রান্ত ধরে যাওয়া, ডানে বামে ও সবদিকে যানবাহনের গতিবিধি দেখে রাস্তা পার হওয়া, দলবেধে হাঁটাসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়।

ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট স্টাডি অনুযায়ী বর্তমানে ঢাকা শহরে বিদ্যালয়ে হেঁটে ৩০% যাতায়াত হয়। তবে ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাই স্কুল এর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের নব্বই শতাংশ হেঁটে যাতায়াত করে এবং আশি শতাংশ এক কিলোমিটার দুরত্বের মধ্যে বসবাস করে থাকে। শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, তাদেরকে হাঁটাপথে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মূখীন হতে হয়। এর মধ্যে বেপরোয়া গাড়ি চালানো, গাড়ির হর্ণ, বৃষ্টির দিনে গাড়ির চাকা থেকে কাদা ছিটকে কাপড় ময়লা হওয়া, সরু রাস্তায় গাড়ি দেওয়ালের দিকে ঘেষে চলা, যানজট অন্যতম। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য শিক্ষার্থীরা সরকারকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান। শিক্ষার্থীরা ওয়াকিং ক্লাব গঠনের মাধ্যমে হাঁটার জন্য নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দময় পরিবেশ তৈরির জন্য কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাই স্কুল এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে গৃহিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে আগামীতে স্থানীয় জনগণ, প্রশাসন, নীতি নির্ধারকগণকে সম্পৃক্ত করে অত্র এলাকায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদে হেঁটে যাতায়াতের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করা হবে। যা সাধারণ পথচারীদের যাতায়াতও নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দময় করবে।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ.এম নুরুল ইসলাম। প্রশিক্ষণ প্রদান করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ট্রাস্ট) এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ রহমান। কমূসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সমাজ সেবক মনজুর হাসান দিলু, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ট্রাস্ট) এর প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান এবং সামিউল হাসান সজিবসহ আরো অনেকে।