English | Bangla
শিশুদের হেঁটে নিরাপদে স্কুলে যাওয়ার পরিবেশের দাবি
শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার জন্য “হেঁটে যাই বিদ্যালয়, দেহ-মন সুস্থ রয়” স্লোগানে ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ স্কুল, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে স্কুলে চলাচলের নিরাপদ পরিবেশ তৈরির দাবিতে আজ সকাল ৯.০০ টায় রায়েরবাজার বৈশাখি খেলার মাঠ হতে আলী হোসেন বালিকা বিদ্যালয় পর্যন্ত একটি র‌্যালির আয়োজন করা হয়। উক্ত কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন পরিবেশ বাচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এবং সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ রহমান। কর্মসূচির শুরুতে বক্তব্য রাখেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এর অধ্যক্ষ এম.এ মান্নান মনির, ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ স্কুল এর অধ্যক্ষ এইচ.এস নুরুল ইসলাম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক সৈয়দ মাহাবুবুল আলম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্র্টির জিগাতলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমেদ, খাদ্য বিষ প্রতিরোধ আন্দোলনের সদস্য সচিব মো. নজরুল ইসলাম, পদাতিক এর মনিরুল হুদা বাবন, বিএনপি ৪৭ নং ওয়ার্ড এর সভাপতি ওসমান গনি শাহজাহান, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর ৪৭ নং ওয়ার্ড এর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং সিনিয়র সদস্য সাইফুল ইসলাম সাজু, সমাজ সেবক মনজুর হাসান দিলু প্রমূখ।
 
ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এর অধ্যক্ষ এম.এ মান্নান মনির বলেন, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সবদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে এবং ট্রাফিক আইনও মানা জরুরী। পাশাপাশি তিনি সরকারের প্রতি বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতের পরিবেশ উন্নত করার আহবান জানান। ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ স্কুল এর অধ্যক্ষ এইচ.এস নুরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই হেঁটে চলাচল করে। কিন্তু হাঁটার উপযোগি পরিবেশ না থাকার কারণে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটানার সম্মুখিন হতে হয়। যার কারণে তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছে অথবা পিতামাতা আতঙ্কিত থাকনে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে হেঁটে স্কুলে যাওয়ার জন্য অন্তত রায়েরবাজার এলাকায় একটি সড়ককে হাঁটাবান্ধব করে উদাহরণ তৈরি করা যেতে পারে। 
 
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক সৈয়দ মাহাবুবুল আলম বলেন, সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন একটি শিশুর জন্য কমপক্ষে এক ঘন্টা শারীরিক পরিশ্রম করা প্রয়োজন। কিন্তু নগরে খেলার মাঠ না থাকা এবং বাসা বাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় শিশুদের প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম হয় না। প্রতিদিন ¯ু‹লে হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে শিশুরা প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রম পেতে পারে। এজন্য শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়মিত হেঁটে যাতায়াতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি তারা কিভাবে নিরাপদে হাঁটবে তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহবান জানান। হাঁটার স্বাস্থ্যগত উপাকরিতার পাশাপাশি, পরিবেশ অর্থনীতি এবং সামাজিক বিষয়গুলোও অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর ৪৭ নং ওয়ার্ড এর সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, হেঁটে চলাচলের মাধ্যমে টাকা যাতায়াত খরচ কমিয়ে আনতে পারি এবং আমরা সুস্থ থাকতে পারি। আমাদের এলাকার রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে সুসম্পর্ক রয়েছে। সবাই মিলে এক সাথে কাজ করলে এলাকার পরিবর্তন আনা সম্ভব। বিএনপি ৪৭ নং ওয়ার্ড এর সভাপতি ওসমান গনি শাহজাহান বলেন, আজকে যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তা রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংঘঠন এবং সাধারন মানুষের জন্য। স্থানীয় সমাজ সেবক মনজুর হাসান দিলু বলেন, আমরা হাঁটার পরিবেশ উন্নত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই। তিনি আরো বলেন যাতাযাতের ক্ষেত্রে হেঁটে বেশি চলাচল হয়। তাই সরকার হাঁটার পরিবেশ উন্নয়নে সচেষ্ট হবেন আমরা এই প্রত্যাশা করি।  
 
পরিবেশ বাচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করতে হবে। প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে শিশুদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, নিদ্রাহীনতাসহ নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি নেতিবাচক মানসিকতার বহি:প্রকাশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যান্ত্রিক যানবাহন থেকে নির্গিত ধোয়া আমাদের পরিবেশে কার্বণের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এত করে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা যদি পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাই তাহলে আমাদের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারবো। হাঁটার উপকারিতা, প্রতিবন্ধকতা ও তা সমাধানের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করে তিনি শিক্ষার্থীদেরও হাঁটার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয়ের প্রতি নজর রাখতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন থাকার পরামর্শ প্রদান করে র‌্যালির উদ্বোধন করেন। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং স্থানীয় এলাকার রাজনৈতিক, সামাজিক ও গুনিজনসহ উক্ত র‌্যালিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। র‌্যালিটি রায়েরবাজার বৈশাখি খেলার মাঠ হতে শুরু হয়ে পশ্চিম ধানমন্ডির শংকরে অবস্থিত ধানমন্ডি কচিকণ্ঠ হাই স্কুল এর সামনে গিয়ে শেষ হয়।