English | Bangla
ধূর্ত তামাক কোম্পানি থেকে দূরে থাকুন
দেশের জনগণের জনস্বাস্থ রক্ষায় ও তামাকজাত দ্রবের ব্যবহার হ্রাসে সরকারের তামাকজাতদ্রবের উপর ধারাবাহিক কর বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে তামাক কোম্পানীগুলো বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। যা  বাংলাদেশে সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের অর্জনসমূহকে বাধাগ্রস্ত করবে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে সরকারের নীতি নির্ধারকদের তামাক কোম্পানীরগুলোর সকল প্রকার বিভ্রান্তকর প্রচেষ্টা থেকে দূরে থাকার জন্য আহবান জানিয়ে আজ ৩০ জুলাই, ২০১৭ সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট কর্তৃক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
 
মানববন্ধনে বক্তরা দাবী করেন,  তামাক কোম্পানীগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন, আইন সংশোধন, তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানসহ তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রণীত বিভিন্ন নীতি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের কুটকৌশল অবলম্বন করে আসছে।  সম্প্রতি তামাক কোম্পানীগুলো সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতি প্রণয়ন কার্যক্রমকে বাধাঁগ্রস্থ করতে চেষ্টা করছে। তামাক কোম্পানীসমুহের এধরনের অপচেষ্টা প্রতিহত করে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে প্রণীত নীতি সমূহের সুরক্ষা করা জরুরী। 
 
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল এর গবেষনা সহকারি ফারহানা জামান লিজা, এইড ফাউন্ডেশনের সিনিয়র এডভোকেসি কর্মকর্তা কাজী হাসিবুল হক। মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নেটওর্য়াক অফিসার শুভ কর্মকার। 
 
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে ১২ লক্ষ মানুষ প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়। ২০০৩ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে গৃহিত বিশ্বব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক চুক্তি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার Framework Convention on TobaccoControl (FCTC)। বিশ্বব্যাপী সব ধরনের তামাকের ব্যবহার সীমিত করার লক্ষ্যে কিছু সার্বজনীন মাত্রা নির্ধারন করে নীতি প্রনয়ণের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাক গ্রহনের কারনে উদ্ভুত মারাত্মক স্বাস্থ্যগত, সামাজিক, পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষায় প্রনীত এ চুক্তিটি। এফসিটিসি এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আর্টিক্যাল ৫.৩ এর প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। এ আর্টিক্যালে জনস্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে জনস্বার্থে প্রণীত নীতিসমুহকে তামাক কোম্পানীর প্রভাব থেকে সুরক্ষার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। 
 
হেলাল আহমেদ বলেন, আর্ন্তজাতিক অভিজ্ঞতা অনুসারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তামাক কোম্পানীগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করতে নীতি নির্ধারকদের প্রভাবিত করার অপচেষ্টা ও কুটকৌশলের আশ্রয় নেয়। আর্ন্তজাতিক চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে তামাক কোম্পানীর এধরনের প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সহায়ক নীতিসমুহ সুরক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এর ৩ নম্বর লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রেও এফসিটিসি বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব প্রদাণ করা হয়েছে। 
 
বক্তরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নকে জোরদার করতে অবিলম্বে সকল তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতি ও কার্যক্রম তামাক কোম্পানীর প্রভাবমুক্ত রাখা জরুরী।