English | Bangla
নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে স্কুলে হেঁটে যাতায়াতে গলি রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের আহ্বান
হেঁটে হেঁটে স্কুলে যাই, অর্থ-স্বাস্থ্য-পরিবেশ বাঁচাই এ স্লোগান নিয়ে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানালো রায়েরবাজার এলাকার চারটি স্কুলের শিক্ষার্থীবৃন্দ। হেঁটে যাওয়ার সময় গাড়ির অতিরিক্ত গতি আতঙ্কের সৃষ্টি করে এবং গাড়ির হর্ন বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে স্কুলে হেঁটে যাতায়াতে গলি রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। ১ মার্চ ২০১৭, সকাল ৯.৩০ এ শংকর থেকে রায়ের বাজার পর্যন্ত ৪টি স্থানে আলী হোসেন বালিকা বিদ্যালয়, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এবং আলিফ আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের সম্মিলিত আয়োজনে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সহযোগিতায় “নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে স্কুলে হেঁটে যাতায়াতের সুবিধার্থে সকলের প্রতি আহ্বান” জানিয়ে আয়োজিত ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা এই আহ্বান জানান।
 
ক্যাম্পেইন পরবর্তী আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরে যাতায়াতের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধি যানজট সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। বিশেষত স্কুলে যাতায়াতের সময়ে একটি শিশুর জন্য একটি গাড়ির ব্যবহার এ যানজট সমস্যা আরো তীব্রতর করে। সন্তানকে অধিক দূরত্বে স্কুলে পাঠানো, নিরাপত্তা, সামাজিক অবস্থান নানা অজুহাতে স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ির উপর নির্ভরশীলতা বাড়ছে। হাঁটার জন্য যথোপযুক্ত পরিবেশ না থাকার কারণেও অভিভাবকরা হেঁটে যাতায়াতে নিরুৎসাহিত হন। 
 
বক্তারা আরো বলেন, প্রতিটি এলাকায় মানসম্পন্ন স্কুল প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন, যাতে অভিভাবকরা বাসার কাছাকাছি স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করাতে পারেন। এর মাধ্যমে যানবাহনের মাধ্যমে যাতায়াত চাহিদা কমে যাবে এবং হেঁটে যাতায়াত সহজ হবে। সরকার ইতিমধ্যে স্কুলে ভর্তির জন্য এলাকার শিক্ষার্থীদের ৪০ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা চালু করেছে। সরকারি গবেষণায়, বর্তমানে ঢাকা শহরে স্কুলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে হেঁটে ৩০ শতাংশ ট্রিপ সংঘটিত হয়। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট কর্তৃক রায়েরবাজার এলাকায় ৫টি স্কুলে জরিপের মাধ্যমে দেখা যায়, প্রায় ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীই হেঁটে স্কুলে যাতায়াত করে থাকে। 
 
তারা বলেন, নানা প্রতিবন্ধকতা স্বত্ত্বেও রায়ের বাজার এলাকার অধিকাংশ শিক্ষার্থী হেঁেট যাতায়াত করে। এলাকাবাসী যদি একটু সচেতন হন তবে এ ধরণের সমস্যাসমূহ দূরীকরণ সহজ হবে। শিক্ষার্থীরা আমাদেরই সন্তান, তাই এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এলাকাবাসীকেই এগিয়ে আসতে হবে। হাঁটার পরিবেশ উন্নত করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হেঁটে স্কুলে যাতায়াত বৃদ্ধি করা গেলে ব্যক্তিগত গাড়ির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে সাহায্য করবে। শিশুদের শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করা যাবে, জ্বালানী অপচয় হ্রাস পাবে, পরিবেশ দূষণ এবং যানজটও হ্রাস পাবে। 
 
সভায় গলি রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ, হর্ন না বাজানো, যত্রতত্র পার্কিং বন্ধ, আবর্জনা না ফেলা, এবং সামাজিক অপরাধ বন্ধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাঁটাপথের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের সুপারিশ করা হয়। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন এর সঞ্চালনায় এবং পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুলেন শিক্ষক নাসরিন আকতার, আলী হোসেন বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক জেরিন সুলতানা, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম.এ মান্নান মনির এবং আলিফ আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক জুয়েল হাসান। সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবির, সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান, সহকারি এডভোকেসী কর্মকর্তা নাঈমা আকতার, তানজিদা হক এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।