English | Bangla
নারায়নগঞ্জ রেলস্টেশন বন্ধ নয় দ্রুত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডাবল রেললাইন বাস্তবায়নের দাবী
ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও ছাত্রসহ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪৫০০ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন বন্ধ করে সড়ক নির্মাণ করা হলে নারায়ণগঞ্জবাসীসহ আশপাশের মানুষ পরিবেশগত, স্বাস্থ্যগত এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। জানা গেছে, যানজাট নিরসনের নামে প্রশাসন কর্তৃক নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন বন্ধ করে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন ও চাষাঢ়া থেকে-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ সরিয়ে সড়ক পথ নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। ঢাকার যানজট নিরসন এবং জনসংখ্যার চাপ কমাতে ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রেলের অবদান অপরিসীম। কাজেই নারায়ণগঞ্জ স্টেশন বহাল রেখেই দ্রুত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডাবল লাইনে রূপান্তর করাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। 
 
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেন, বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের ভিতরে একটি ২ নং রেলগেট এ ঘন্টায় ৩ বার সিগন্যালে অপেক্ষা করতে হয়। অথচ রেলক্রসিং ছাড়াই রেলগেট সংলগ্ন ইন্টারসেকশনটিতে সড়ক পরিবহনের জন্য সিগন্যালে ঘন্টায় ২০ সিগন্যালে অপেক্ষা করতে হয়। কাজেই ৯ মিনিটের সিগন্যালকে যানজটের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এছাড়া রেলস্টেশন চাষাঢ়ায় স্থানান্তর হলে নারায়ণগঞ্জ থেকে সমপরিমাণ যাত্রী পরিবহন করতে প্রতিদিন অন্যান্য সড়ক পরিবহনের তুলনা করলে দেখা যায়, ৯০ টির মত বাস, ২,২৫০ টি রিকশা, সিএনজি ১৫০০ এবং প্রাইভেট গাড়ি লাগবে ১৫০০ টি। যা সড়কে অধিক যানজটের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। পাশাপাশি মানুষের য়াতায়াত ব্যয় দ্বিগুন হবে, যানবাহন পেতে দূর্ভোগ বাড়বে।
 
পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ আবদুস সোবহান বলেন, নারায়ণগঞ্জ স্টেশন দিয়ে লক্ষ মানুষ যাতায়াত করে। নানা রকম যড়যন্ত্র করেও মানুষকে রেল বিমুখ করতে না পেরে স্টেশন বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন বন্ধের কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করে বর্তমান ট্রেনের কোচ সংখ্যা বৃদ্ধি করে দেশের সকল বন্ধ স্টেশনগুলো চালু করার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেণু বলেন, রেলে যত সহজে যাতায়াত করা যায়, তা অন্য মাধ্যমে সম্ভব নয়। কাজেই  বিশ্বের প্রায় বেশির ভাগ শহরেই এখন রেলকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন রকমের ট্রেন দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলছে। সে সময় আমরা যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেলকে পশ্চাৎপদ করে রাখছি। নারায়ণগঞ্জ স্টেশন না সরিয়ে বরং সঠিক ব্যবস্থাপনা করা প্রয়োজন।
  
গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালক ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন বলেন, বিশ্বের প্রায় বেশির ভাগ শহরেই এখন কেন্দ্রে রেল স্টেশন রেখে পরিবহন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের বর্তমান সমস্যা সমাধানে ঢাকা শহরের বনানী  এর ন্যয় রেলক্রসিংয়ের উপর ওভারপাস নির্মাণ করা যেতে পারে। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতি হিসেবে পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ঢাকার আশপাশের বিশাল জনগোষ্ঠির যাতায়াতের ক্ষেত্রে রেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে ঢাকার যানজট নিরসন এবং জনসংখ্যার চাপ কমাতে ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রেলের অবদান অপরিসীম। কাজেই নারায়ণগঞ্জ স্টেশন বহাল রেখেই দ্রুত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডাবল লাইনে রূপান্তর করাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। যা বাংলাদেশের অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও শ্রমের গতিশীলতাকে শক্তিশালী করবে।
 
গোলটেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন মর্ডাণ ক্লাবের আবুল হাসনাত, প্র্যাস বাংলাদেশের মেহেদী হাসান স্মরন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর ডেপটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবীর এবং পবা’র সদস্য কায়সার আহমেদ প্রমুখ।