English | Bangla
তরুণদের তামাক আসক্তি থেকে রক্ষায় তামাকে উচ্চহারে করারোপের আহব্বান
তরুণ প্রজন্মকে তামাকে আসক্ত করতে নানাধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে তামাক কোম্পানিগুলো। তাদের মুনাফার বলি হচ্ছে দেশের সম্ভাবনাময় তরুণরা। পাশাপাশি তামাক ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিতে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন এবং তামাকের কর বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো।
 
তরুণ প্রজন্মকে তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিতকরণ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এর উপর উচ্চহারে করারোপ ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সকল নীতিতে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বন্ধ জরুরী। ০৪ জুন, ২০১৮ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র আয়োজনে “তামাকের উপর কর বৃদ্ধিতে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হোক” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি বক্তারা এ আহব্বান জানান।
 
জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) এর প্রকল্প সমন্বয়কারী একেএম খলিল উল্লাহ এর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান, এইড ফাউন্ডেশনের সিনিয়র এডভোকেসী অফিসার কাজী মো. হাসিবুল হক, বাপা’র জাতীয় কমিটির সদস্য মো. নাজিমুদ্দিন, টোব্যাকো কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ সেল এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন প্রমূখ। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা শুভ কর্মকার।
 
বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানীগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রণীত বিভিন্ন নীতি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের কুটকৌশল অবলম্বন করে আসছে। প্রতিবছর তামাক কোম্পানীগুলোর বিভ্রান্তকর তথ্য প্রদানের জন্য কাক্ষিত মাত্রায় তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে না। কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণে উচ্চহারে কর বৃদ্ধির বিকল্প নেই। 
 
বাংলাদেশে ৪৯% মানুষ বয়সে তরুণ। দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১০ কোটি ৫৬ লাখ। তামাক কোম্পানিগুলো এই কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠিকে তামাকজাত দ্রব্যের ভোক্তা হিসেবে পেতে মরিয়া। তাদের এ অপতৎপরতা প্রহিহত করতে হবে। সুনাগরিক হিসাবে গড়ে উঠতে ও স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য তরুণদের ধূমপানসহ সব ধরনের নেশা থেকে দূরে থাকা দরকার। বর্তমান যুবদের অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে সচেতন করতে পারলে আগামীতে প্রবীনদের মাঝে এ রোগ কমে আসবে। ফলে দেশের সামগ্রীক প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রগণি ভ’মিকা পালন করতে পারবে দেশের যুবসমাজ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র ২০৪০ সালের মধ্যে “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়নও গতিশীল হবে।
 
বক্তরা আরো বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজস্ব প্রয়োজন কিন্তু রাষ্ট্রের জনগনকে ক্ষতিকর নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনের মাধ্যমে রাজস্ব প্রাপ্তি কখনোই কাম্য নয়। তামাক কোম্পানীগুলো যে পরিমান রাজস্ব প্রদান করে তার চেয়ে অনেক বেশী মানুষ প্রতিবছর তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করে এবং পঙ্গুত্বের শিকার হয়। সারাবছর তামাক কোম্পানীগুলো কোন কর্মসূচি পালন না করলেও প্রতিবছরই বাজেট প্রণয়নের সময়কালে অর্থাৎ (মে-জুন মাসে) তামাকজাত দ্রব্যের উপর শুল্ক প্রত্যাহারের দাবীতে তারা নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। বাজেট চলাকালীন সময়ে এসকল কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য থাকে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরীর মাধ্যমে তামাকের কর এবং প্রকৃত মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। তামাক কোম্পানিগুলো বছরে শত শত কোটি টাকার কর ফাঁকি দিচ্ছে। তাদের  কাছ থেকে কর আদায়ের রাজস্ব বিভাগকে আরো সক্রিয় হতে হবে। কর ফাঁকি প্রতিরোধে সকল তামাক কোম্পানিকে নিবন্ধনের আওতায় আনারও দাবী জানান তারা। 
 
কর্মসূচিতে প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, হিমু পরিবহন, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিং, উন্নয়ন সংগঠক সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।