English | Bangla
মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন জরুরি

জনসাধারণকে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদান রাষ্ট্র ও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। এমতাবস্থায় শারিরিক ও  মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরী। দেশে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করা সম্ভব। ২৬ নভেম্বর ২০২০ বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজনে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কৈবর্ত সভা কক্ষে “রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে প্রয়োজন হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ দাবী করেন।


ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা: লেলিন চৌধুরী, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ। এছাড়াও সভায় উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস এর কান্ট্রি এডভাইজার মো: শফিকুল ইসলাম। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি ইউনিয়ন এর কারিগরি পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান ।

সৈয়দ মাহবুবুল আলম  প্রবন্ধে বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে বিদেশী সংস্থার মুখাপেক্ষী হতে হয়। নির্বিঘেœ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্থানীয় উৎসসমূহের দিকেই দৃষ্টি দিতে হবে। স্থানীয় উৎস দাতা গোষ্ঠীর উপর অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা কমাবে। এক্ষেত্রে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। 

গাউস পিয়ারী বলেন, রাষ্ট্রের জনগন সুস্থ্য থাকলেই দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। জনগনকে অসুস্থ্য হবার পর চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেয়ে তাদের যাতে রোগ কম হয়, চিকিৎসা নির্ভরতা কমে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। মানসিক ও শারিরীকভাবে সুস্থ্য জাতি গড়ে তুলতে পারলে চিকিৎসার উপর নির্ভরতা কমার পাশাপাশি এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অগ্রগতি সাধিত হবে। আর্ন্তজাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে দেশে স্বায়ত্বশাসিত, স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ এবং জবাবদিহিতামূলক হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করা জরুরী।

ডা: লেলিন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্য সবার অধিকার। কিন্তু স্বাস্থ্যকে এখন অর্থের মানদন্ডে বিবেচনা করা হচ্ছে। আমাদের চিকিৎসাকেন্দ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতেই হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গড়তে হবে। আমাদের খাদ্যের বিশুদ্ধতার মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। বর্তমানে দূষিত খাদ্যের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে। আবার বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণে মানুষ অসুস্থ হচ্ছে।  

আবু নাসের খান বলেন, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পরিবেশ ও প্রাণীর সুরক্ষায় নজর দিতে হবে। হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশনের অন্যতম কাজ হবে প্রকৃতির স্বাভাবিকতার সাথে জীবনকে মিলিয়ে নেওয়ার অভ্যস্থতায় আইন, নীতি, পরিকল্পনা তৈরি ও বাস্তবায়নে কাজ করা।  

হেলাল আহমেদ বলেন,  সকল বয়সী মানুষের জন্য শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এসডিজির ১৭ নম্বর গোল অনুসারে অংশীদারিত্বের উপর জোর দিতে হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বহু খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা ২০১৮-২০২৫ বাস্তবায়ন, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করা জরুরী।  

আলোচনা সভায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, টিসিআরসি, এইড ফাউন্ডেশন, নাটাব, কারিতাস বাংলাদেশ, বিআরডিএস, নবনীতা মহিলা কল্যাণ সমিতি, কেরানীগঞ্জ হিউমেন রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ গার্ল গাইডস, স্টেট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সুজন, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা ফোরাম, আরাম ফাউন্ডেশন, আইডাব্লিউবি, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটসহ নানা সামাজিক সংগঠন অংশগ্রহন করেন।