English | Bangla
সড়ক পারাপারে বিদ্যালয়ের সম্মুখে জেব্রা ক্রসিং দেয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের

গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে সড়ক পারাপারে প্রতিনিয়ত আমাদের ঝুঁকির মুখে পড়তে হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় নিয়মিত হেঁটে বিদ্যালয়ে যাতায়াত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং সমতলে নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে রাস্তা পারাপারে জেব্রা ক্রসিং-এর বিকল্প নেই। বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াতে নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিদ্যালয়ের সামনে আমরা জেব্রা ক্রসিং দেয়ার দাবি জানাই। 

১২ জানুয়ারি ২০২২ সকাল ১১.০০টায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, মালিবাগ শাখা, এ্যাস্ট্রজেনেকা এর ইয়াং হেলথ প্রোগ্রাম, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম, পল্লীমা সংসদ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে আয়োজিত ‘নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে হেঁটে রাস্তা পারাপারে বিদ্যালয়ের সামনে জেব্রা ক্রসিং চাই’ শীর্ষক মানববন্ধনে এভাবেই নিজেদের দাবি তুলে ধরেন সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ- এর শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রজেক্ট অফিসার প্রমা সাহার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংস্থার সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমান, সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ-এর কো-অর্ডিনেটর মো: সোলায়মান কবীর। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার এবং সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, মালিবাগ শাখার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা হেঁটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে বলেন, গাড়ির বেপরোয়া গতি, ফুটপাতে অবৈধ পার্কিং এবং মোটর সাইকেলের অবাধে চলাচল, জলাবদ্ধতা, ময়লা-আবর্জনা, ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকা, ইভটিজিং, উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান ইত্যাদি কারণে হেঁটে যাতায়াতে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের বিদ্যালয়ের ভবনগুলো রাস্তার উভয় পাশে অবস্থিত। গাড়ির অতিরিক্ত গতির কারণে আমাদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয়। বিদ্যালয়ের সামনে একটি জেব্রা ক্রসিং আছে কিন্তু এর ব্যবহার নিশ্চিত হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জেব্রা ক্রসিংটির রং হালকা হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের সম্মুখে জেব্রা ক্রসিংটি পুনরায় রং করে এর কার্যকারিতা নিশ্চিত এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক পারাপার নিশ্চিত হবে।

বক্তারা বলেন, হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে সহজেই দৈনন্দিন শারীরিক কার্যক্রমের চাহিদা পূরণ সম্ভব। ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত মাঠ-পার্ক না থাকায় শিশু-কিশোররা খেলাধূলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। বিদ্যালয়ে হেঁটে যাতায়াত তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সক্ষম। কিন্তু সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ না থাকায় অনেক শিক্ষার্থীই হেঁটে যাতায়াতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। আবার যারা হেঁটে যাতায়াত করে তাদেরও ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াতে বাধ্য হতে হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, খিলগাঁও এলাকায় হাঁটার পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, অনেক স্থানেই ফুটপাত ভাঙ্গাচোড়া, ড্রেনের ঢাকনা খোলা এবং বড় বড় গর্ত, যা যেকোন সময় শিক্ষার্থীসহ সকল পথচারীর জন্য দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। এছাড়াও ফুটপাতে যত্রতত্র অবৈধ পার্কিং, নির্মাণ সামগ্রী, দোকানের মালামাল এবং ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকায় পথচারীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। “জাতীয় সমন্বিত বহু মাধ্যম ভিত্তিক পরিবহন নীতিমালা, ২০১৩” “ঢাকা স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্লান (এসটিপি) তে “পথচারীর অগ্রাধিকার” বিষয়ে সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অবিলম্বে নগর পরিকল্পনায় পথচারীদের প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই।