English | Bangla
ডিএসসিসি’র ৫৬ নং ওয়ার্ড কামরাঙ্গীরচরে এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার

কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের সুবিধা নিশ্চিতে এবার কামরাঙ্গীরচরে উদ্বোধন হলো এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের আওতায় এটি ঢাকা শহরের তৃতীয় কৃষকের বাজার।  নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে এটিই প্রথম কৃষকের বাজার। কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া ইউনিয়ন থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষী তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল এ বাজারে বিক্রি করবেন। প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কামরাঙ্গীরচরের শেখ জামাল স্কুলের সম্মুখে, নদীর পাড়ে এ বাজারটি আয়োজিত হবে। এলাকাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ খাদ্যের যোগান দিতে বাজারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমাদের বিশ^াস। আজ ২৬ আগস্ট ২০২২ সকাল ৯.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৬ নং ওয়ার্ডে কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব মোহাম্মদ হোসেন। ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় আয়োজনে বক্তব্য রাখেন কেরানীগঞ্জের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল আমীন, কামরাঙ্গীরচরের মেট্রোপলিটন কৃষি কর্মকর্তা মুশফিকা সুলতানা, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান, ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো। এছাড়া আয়োজনে আরো বক্তব্য রাখেন কলাতিয়া ইউনিয়নের সাব এসিস্টেন্ট এগ্রিকালচার অফিসার আনোয়ার হোসেন, ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের এর সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট জাহাঙ্গীর আলম, নিউট্রিশন এন্ড জেন্ডার  স্পেশালিস্ট মাসুমা চৌধুরী এবং ঢাকা দক্ষিণের সিটি কো-অর্ডিনেটর শরীফা পারভীন।  
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব মোহাম্মদ হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ছোট পরিসরে সপ্তাহে একদিন কৃষকের বাজারটি আয়োজিত হচ্ছে। তবে আমরা এটিকে স্থায়ী বাজারে পরিণত করতে চাই যেন এলাকাবাসী প্রতিদিনই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারেন। কৃষকদের পানি, শৌচাগার সুবিধা নিশ্চিতের জন্য বিদ্যালয়ের সামনের সড়কটি কৃষকের বাজার আয়োজনের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। কৃষক ও ক্রেতা উভয়েই যেন উপকৃত হন, সে বিষয়টি কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে নিশ্চিত করা হবে।
কেরানীগঞ্জের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো শহীদুল আমীন বলেন, এই কৃষকের বাজারে কলাতিয়া ইউনিয়ন থেকে ১০ জন কৃষক এসেছেন। তারা সবাই নিরাপদ চাষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রশিক্ষিত। শুধুমাত্র দেশের বাইরে রপ্তানি নয়, দেশের মানুষের জন্যও আমরা নিরাপদ খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে চাই। এলাকাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যকর সবজির পাশাপাশি কৃষকদের যথাযথ লাভ নিশ্চিত করার জন্যই কৃষকের বাজার কার্যক্রমটি গৃহীত হয়েছে। কাউন্সিলর কার্যালয় এবং এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আহ্বান জানাই।
কামরাঙ্গীরচরের মেট্রোপলিটন কৃষি কর্মকর্তা মুশফিকা সুলতানা বলেন, সঠিক মাত্রায় বিষ প্রয়োগ না করা এবং বিষ প্রয়োগের পর পরই সবজি সংগ্রহ করা হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃষকগণ বিষের মাত্রা ও সবজি সংগ্রহের সময় কাল সম্পর্কে জানেন। পাশাপাশি তারা ক্ষতিকর রাসায়নিক কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করেন। এ ধরণের উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের সিনিয়র টেকনিক্যাল এডভাইজার জাভিয়ে বোয়ান বলেন, নগরবাসীর পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিতে নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট সম্মিলিতভাবে এ উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। মোট ১৬টি বাজার এ কার্যক্রমের আওতায় স্থাপিত হবে। কৃষক ও ক্রেতা উভয়েই এ কার্যক্রম থেকে উপকৃত হবেন বলে আমাদের বিশ^াস।
ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, কৃষকের বাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলো কৃষক ও এলাকাবাসী। কৃষক নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদন করে এলাকাবাসীর জন্য এ বাজারে নিয়ে আসছেন। আবার এলাকাবাসী না কিনলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন না। এলাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী নিরাপদ সবজি-ফল নিয়ে আসা হলে উভয় পক্ষই উপকৃত হবেন।