English | Bangla
ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় ষোড়শ কৃষকের বাজার রূপনগরে

নগর এলাকার ভোক্তাদের নিরাপদ খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় ‘এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপন’ শীর্ষক কার্যক্রমের আওতায় ষোড়শ এবং সর্বশেষ কৃষকের বাজার আজ উদ্বোধন করা হলো। এলাকাবাসী ও কৃষকের জীবনমান উন্নয়নে প্রত্যেকটি বাজার চলমান থাকবে। এই ১৬টি বাজারের আদলে ঢাকা শহরের অন্যান্য ওয়ার্ডেও কৃষকের বাজার গড়ে তোলা হলে জনস্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।  
আজ ২৫ নভেম্বর ২০২২ সকাল ৮.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ডে রূপনগর আবাসিক এলাকার ২৩ নং রোডে কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। এ বাজারে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাভারের বিরুলিয়া থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষী তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল বিক্রি করবেন।  
কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ তফাজ্জল হোসেন টেনু। উদ্বোধনী আয়োজনে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সবুজ চৌধুরী, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ২ এর সহকারি সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। আয়োজনে আরো বক্তব্য রাখেন এইচ এম নুরুল হক, সহ-সভাপতি, রূপনগর বাড়ি মালিক সমিতি, মিজানুর রহমান, সাবেক স্টেশন প্রধান, প্রিজন বাংলাদেশ। আরো উপস্থিত ছিলেন সাভার বিরুলিয়ার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ আলী শেখ, ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ঢাকা উত্তরের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ নজরুল ইসলাম এবং স্থানীয় এলাকাবাসী।  
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ তফাজ্জল হোসেন টেনু বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নিরাপদ চাষাবাদ এবং খাদ্যে স্বনির্ভর হওয়ার প্রতি জোরারোপ করেছেন। বর্তমানে নগর এলাকায় ছাদকৃষিকে প্রাধান্য দেয়ার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গৃহীত হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য আমাদের জন্য অপরিহার্য। সকালের দিকে সব থেকে বেশি মানুষ এ এলাকায় বাজার করেন। ফলে কৃষক ভাইদের প্রতি অনুরোধ তারা যেন সকাল সকাল কার্যক্রমটি শুরু করেন। তাহলে এলাকাবাসী এবং কৃষক উভয়েই লাভবান হবেন।
সাভার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ সবুজ চৌধুরী বলেন, জৈব পদ্ধতিতে পোকা দমন সম্ভব না হলে ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। কীটনাশক প্রয়োগের পরে ফসল উত্তোলনের একটি নির্দিষ্ট সময় কাল রয়েছে। তা অনুসরণ করা হলে ফসলটি মানব দেহের জন্য নিরাপদ হয়। কৃষকের বাজারের জন্য বাছাইকৃত প্রতিটি কৃষক এটি অনুসরণ করেন। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ নিয়মিত তদারকি করেন। আমরা নিশ্চিত করতে পারি এ বাজারের সবজিগুলো নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ২ এর সহকারি সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কৃষকের বাজারটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একটি বাজার কমিটি গঠন করা হবে, যারা পণ্যের দাম, মান, বাজার ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ প্রতিটি বিষয় মনিটরিং করবেন। এলাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ, আপনারা কৃষকদের সহযোগিতা করবেন, নতুবা বাজারটি টেকসই হবে না।
ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, ঢাকাবাসীর নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে আজকের বাজারটি উদ্বোধন হলো। কৃষকগণ এ কার্যক্রমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাদের অবদানের জন্য আমরা তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ খাদ্য এবং কৃষকদের পণ্যের সঠিক মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিতে কৃষকের বাজার কার্যক্রমটির যাত্রা শুরু হয়। ২০২১ সালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডে একটি পরীক্ষামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়নের পর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে আরো ১৫টি কৃষকের বাজার স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। আজ এ কার্যক্রমের আওতায় সর্বশেষ কৃষকের বাজারের উদ্বোধন করা হলো। এ উদ্যোগ নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।