English | Bangla
গাজীপুরে কৃষকের বাজার টেকসই করতে অংশীজন কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ভোক্তাদের নিরাপদ, পুষ্টিকর, ও তাজা শাক-সবজির যোগান নিশ্চিতকরণে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ ও ২৮ নং ওয়ার্ডে দুটি কৃষকের বাজার যথাক্রমে ১৮ ও ১৬ সপ্তাহ যাবৎ পরিচালিত হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য এবং কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বাজারগুলো টেকসই করা প্রয়োজন। আজ ১০ জানুয়ারি ২০২৩, সকাল ১০.০০ টায় গাজীপুরে একটি রিসোর্টে কৃষকের বাজারের অভিজ্ঞতা বিনিময় বিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা এ কথা বলেন।  
উক্ত কর্মশালায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখার যুগ্মসচিব নুমেরী জামান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাসিরউদ্দিন মোল্লা, ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদীন এবং সভাপতিত্ব করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী। আয়োজনে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকোনমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো, সাসটেইনেবেল এগ্রিকালচার স্পেশালিস্ট জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসিবুল হাসান, সাভারের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ, কৃষকের বাজার কমিটির সদস্যবৃন্দ।
কর্মশালায় ৮টি দলে বিভক্ত হয়ে কৃষকের বাজার টেকসই করে তোলার ক্ষেত্রে কৃষকের বাজারের স্থায়ী জায়গা, অবকাঠামো এবং সুবিধাদি প্রদান, বাজারের কাছাকাছি সংরক্ষণাগার নিশ্চিত করা, সমবায়ের মাধ্যমে পরিবহন খরচের ব্যবস্থাপনা, পয়:নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাজার কমিটি কর্তৃক পণ্যের দাম ও মান তদারকি, পণ্যের বৈচিত্র্যতা নিয়ন্ত্রণ, একদিনের পরিবর্তে দুই বা তিন দিন বাজার আয়োজন করা, নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করা; কৃষকদের ব্যবসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।
আয়োজনের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখার যুগ্মসচিব নুমেরী জামান বলেন, একটি বাজার চলমান থাকে নিজের গতিতেই। কৃষকের বাজারে স্থায়ী অবকাঠামো প্রদান করা কঠিন। তবে নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক উদাহরণ অনুসরণ করে অস্থায়ী অবকাঠামোর মাধ্যমে বাজার চলমান রাখা যেতে পারে। সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি ব্যবহার করে সামান্য কিছু খরচ প্রদানের মাধ্যমে পরিবহন সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। যে কাঁচা বাজারগুলো আছে, সেখানে সপ্তাহে একদিন একটি কর্ণারে কৃষকদের নিরাপদ পণ্য বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাসিরউদ্দিন মোল্লা বলেন, সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু পরিবহন আছে। শুক্রবারে সেগুলো ব্যস্ত থাকে না। এই পরিবহনগুলো কৃষকের বাজারের পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হলে পরিবহন সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদীন বলে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের দুটি কৃষকের বাজার এলাকাবাসীর মধ্যে সাড়া ফেলেছে। এটি টেকসই করার ক্ষেত্রে আমাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকোনমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, খাদ্য ব্যবস্থায় কৃষকের বাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভোক্তাদের নিরাপদ খাদ্য পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে আমরা শুধুমাত্র শাক-সবজি-ফলমূলে গুরুত্ব দিয়েছি। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা মাছ-মাংস নিশ্চিত করতে পারিনি। বাজারগুলো টেকসই হবে কি না তা নির্ভর করছে এলাকাবাসীর চাহিদার উপরে। আমরা কার্যক্রমটি শুরু করেছি। আমাদের বিশ্বাস এ বাজার আরো বিস্তৃত হবে এবং নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, প্রতিটি অংশীদারদের সহযোগিতার মাধ্যমে কৃষকের বাজার সফলভাবে স্থাপিত হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে বাজারগুলো টেকসই করে তোলা সম্ভব।
আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর শহীদুল ইসলাম, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, নগর পরিকল্পনাবিদসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ, সাভার ও গাজীপুর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ, কৃষক ও বাজার কমিটির সদস্যসহ আরো বিভিন্ন অংশীজন