English | Bangla
ডাব্লিউবিবি পরিচিতি

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ একটি স্লোগান,  ১৯৯৮ সালে দেশের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক কয়েকটি সমস্যার বাস্তবধর্মী সমাধানের লক্ষে মানুষের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। সংস্থার পুরো নাম ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, যা সংক্ষেপে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট নামে পরিচিত, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে নীতিগত সিন্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে লক্ষ্যে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট তামাক নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, নগর পরিবহণ ও পরিকল্পনা, পানির উৎস সংরক্ষণ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিত সমতা বিষয়ে নীতি গ্রহণে ও বাস্তবায়নে সহযোগি ভূমিকা রাখছে।

শহর মানে শুধু রাস্তা, গাড়ি এবং বিল্ডিংয়ের সমাহার নয়। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোর প্রতিফলন ঘটাতে নগর পরিকল্পনায় ভূমির সঠিক ব্যবহার ও পরিবহণ পরিকল্পনায় সমন্বয় সাধন, মানুষের যাতায়াত কমিয়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্যদি মানুষের কাছে নিয়ে এসে প্রাইভেট গাড়ীর উপর নির্ভরতা কমানো এবং মিশ্র এলাকা তৈরিতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা।

হাঁটা মানুষের মৌণিক অধিকার। জন্মেন পর থেকে মৃত্যুর আগ পযর্ন্ত মানুষ যতক্ষণ হাঁটে ততক্ষণই সে সুস্থ। ফুটপাত ভেঙ্গে গাড়ীর জন্য জায়গা দেয়ায় দিনদিন হাঁটার পরিবেশ সংকুচিত হচ্ছে। ফুটপাতে হাঁটার উপযোগী পরিবেশ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও হাঁটার অধিকার প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ গ্রহণ।

গণপরিবহণ ব্যবস্থা যে কোন বড় শহরের প্রাণ। মানসম্মত বাস সার্ভিস ও সেবামান িবৃদ্ধি করে প্রাইভেট গাড়ীর উপর নির্ভরতা কমাতে যানজট নিরসনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে কার্যক্রম পরিচালনা।

সড়ক দূর্ঘটনা কমিয়ে আনতে রেলে যাতায়াতকে উদ্বুদ্ধ করা, রেলের অবকাঠামো ও সেবামান বৃদ্ধিসহ দূরবর্তী যাতায়াতে রেলে ।ভ্রমন এবং রেলকে গণমূখী পরিবহণ হিসেবে বিবেচনা করতে জনমত গঠনে কার্যক্রম পরিচালনা।

শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধূলার বিকল্প নেই। পর্যাপ্ত খেলার মাঠ না থাকায় শিশুরা গৃহবন্দী। শিশুদের খেলার জায়গা সৃষ্টিতে কানাগলি অথবা কম ব্যস্ত রাস্তা ব্যবহারের মাধ্যমে খেলাধূলার সুযোগ তৈরিতে সচেতনতা সৃষ্টি।

বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। যা আমাদেরই সৃষ্ট। জ্বালানীর সীমিত ও পরিমিত ব্যবহারের মাধ্যমে কার্বন ডাই অক্সাইডের এই অব্যাহত বৃদ্ধির মাত্রাকে কমিয়ে আনতে হাঁটা, সাইকেল ও রিকশার ব্যবহার বৃদ্ধি করে বায়ুমন্ডলে কার্বনের মাত্রা 350-এ নামিয়ে আনতে জনমত তৈরি ও অংশগ্রহণ।

শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম পরিচালনা।

বাড়ীর সামনেরটা পুকুর পিছনেরটা ডোবা। সকল জলাধারকে সামনে রেখে অবকাঠামো নির্মাণ করা হলে খাল-বিল নদীসহ জলাশয়গুলো দূষণ ও দখলের হাত থেকে রক্ষা পাবে। জলাশয়, পানির আঁধার, প্রাকৃতিক উৎস সংরক্ষণে বিশুদ্ধ পানির যোগান নিশ্চিত করা এবং পানির সংকট নিরসনে ব্যবহৃত পানির পুনঃব্যবহারে উৎসাহিত করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি।

তামাক ব্যবহার শুধু স্বাস্থ্য ক্ষতি নয়, পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব মারাত্মক। দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণীত হয়েছে। সারাদেশে তৃণমূল সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করে আইন বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ধূমপানমুক্ত স্থান তৈরি, খাদ্য নিরাটত্তা নিশ্চিত ও অপুষ্টি হ্রাসে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, তামাকের উপর কর বৃদ্ধি, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র সতর্কবানীর ট্রচলন, সর্বোপরি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। পাশাপাশি গবেষণা প্রতিবেদন এবং উপকরণ তেরি ও বিতরণের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

অর্থনীতিতে প্ররুষের পাশাপাশি নারীদের অবদান অপরিসীম। গৃহস্থালী কাজের মাধ্যমে পারিবারিক ক্ষেত্রেও তারা রাখছে বিশেষ অবদান। তাদের এই সম্মিলিত কাজের সমন্বিত রূপটিকে জানা এবং জানাতে গবেষণাধর্মী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

অর্থনেতিক সূচককে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে মূলত আমরা মানবাধিকারই লঙ্ঘন করছি। প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারসাম্যহীন প্রতিযোগিতায় আমরা আমাদের পরিবার , আত্মীয়স্বজন থেকে দূরে সরে যাচ্ছি, হাড়িয়ে ফেলছি সামাজিক মূল্যবোধ। শুধু তাই নয় জিডিপি বাগাতে গিয়ে গড়ে তুলছি বড় বড় শিল্প কারখানা। পণ্য উৎপাদনেরর যোগান দিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ধ্বংস করছি আমাদের বন, নদী প্রাকৃতিক সম্পদের উৎস। প্রতিনিয়ত দেখা ‍দিচ্ছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। যার ক্ষতিপূরণ অর্থ দ্বারা সম্ভব নয়। সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য শুধু অর্থ নয়, প্রয়োজন পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ। আমাদের লক্ষ্য পরিকল্পনায় অর্থনীতির পাশাপাশি সামাজিক ও প্রাকৃতিক বিষয়গুলোকে সমৃদ্ধি সূচকের মধ্যে সমন্বয় সাধনে জনমত সৃষ্টি করা।

স্বাস্থ্য মানুষের মৌলিক অধিকার। স্বাস্খ্যকে বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়। মানুষের সুস্থ্যভাবে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, জীবনমান সম্পন্ন পরিবেশ এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিশ্চিত করা প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয়ভাবে শুধু চিকিৎসা নয়, বরং মানুষ সুস্থভাবে বাঁচার জন্য বিষয়গুলো স্বাস্থ্যনীতি ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে নিশ্চিত করা প্রয়োজন।মানুষের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের প্রক্রিয়া সুষ্টি করাই স্বাস্থ্য অধিকার কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য।