English | Bangla
হেঁটে স্কুলে যাতায়াতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে দেয়ালে লিখলো শিশুরা

ঢাকা শহরে স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় যানজট সমস্যা সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। একটি শিশুর জন্য একটি গাড়ি ব্যবহার এই যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ। স্কুলে হেঁটে যাতায়াতের মাধ্যমে যানজট হ্রাস পাবে। ভালো থাকবে শিশুর স্বাস্থ্য, কমবে পরিবেশ দূষণ এবং যাতায়াত খরচও সাশ্রয় হবে। এজন্য প্রতিটি কমিউনিটিতে সমমানের স্কুল থাকা এবং স্থানীয় স্কুলে শিশুদের পড়ালেখা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। যাতে করে অল্প দূরত্বে শিশুরা হেঁটে স্কুলে যেতে পারে। সম্প্রতি সরকার এ বিষয়টি বিবেচনা করে স্থানীয়দের জন্য স্কুলে ৪০ শতাংশ কোটা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিশুদের অল্প দূরত্বের মধ্যে হেঁটে স্কুলে যাতায়াতের পথকে সুগম করা যায়। পাশাপাশি অনেকেই বর্তমানে অনেক স্কুলেই শিশুরা হেঁটে যাতায়াত করে। তাদের হাঁটার সুবিধার্থে নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দময় পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।

দেয়াল অঙ্কন কর্মসূচি পূর্ববর্তী সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট স্টাডি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা শহরে স্কুলে হেঁটে ৩০ শতাংশ যাতায়াত হয়। অভিভাবকদের পছন্দানুযায়ী স্কুলে সন্তানদের পড়ানোর জন্য দূরত্ব বেশি হওয়ার কারণে গাড়ির উপর নির্ভরশীলতা দেখা যায়। এমনকি অনেক সময় সামাজিক মর্যাদা বাড়ানোর ভ্রান্ত ধারনা থেকে অনেকেই অল্প দুরত্বেও সন্তানদের গাড়ি করে আনা নেওয়া করে থাকেন। তবে হাঁটার পরিবেশ উন্নত না হওয়ার কারণেও অনেকেই গাড়ি অথবা রিকশার উপর নির্ভরশীল। 

তারা আরো বলেন, রায়েরবাজার এলাকায় অধিকাংশ শিশুরা নিকটবর্তী স্কুলে পড়ালেখা করে থাকে। এখানে তিনটি স্কুলে জরিপের মাধ্যমে দেখা যায়, ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী ১ কিমি দুরত্বের মধ্যে বাস করে এবং ৯৩ শতাংশই হেঁটে যাতায়াত করে। এখানে নিরাপদে ও স্বচ্ছন্দে হাঁটার পরিবেশ তৈরি করা গেলে একটি উদাহরণ সৃষ্টি হবে। যা পরবর্তীতে অন্যান্য এলাকার জন্য অনুসরণীয় হতে পারে। এজন্য স্থানীয় অধিবাসীদের এগিয়ে আসতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে। এছাড়া কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সবশেষে বক্তারা শিশুদের নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে হেঁটে যাতায়াতের জন্য রায়েরবাজার বৈশাখী খেলার মাঠ থেকে ধানমিন্ড শংকর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত গলি রাস্তায় গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ, হর্ণ না বাজানো, রাস্তায় মার্কিং করা, শিক্ষার্থী-অভিভাবক-স্থানীয়দের সচেতন করার সুপারিশ করেন।

ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার জিয়াউর রহমান লিটু’র সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ক ফর এ বটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার, মারুফ হোসেন, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল’র অধ্যক্ষ এম.এ মান্নান মনির, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল’র শিক্ষক শওকত আলী। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির গবেষক, মহিউদ্দিন রাসেল, মাস্তুল ফাউন্ডেশনের সদস্য মনির হোসেন নিশান, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, নাজনীন কবীরসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এবং ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল এর শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকবৃন্দ।