English | Bangla
শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে মাঠে নামলো “পরিবেশ দূত”
যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধে পথচারী কর্তৃক আবর্জনা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন শহরের বিভিন্ন রাস্তায় আবর্জনা পাত্র স্থাপন করেছেন। কিন্তু আবর্জনা পাত্র রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং সর্বোপরি জনসাধারন যথাযথ ব্যবহারে সচেষ্ট না হওয়ায় আবর্জনার পাত্রগুলো স্থাপনের উদ্দেশ্যে ব্যহত হচ্ছে। এক্ষেত্রে এলাকা ভিত্তিক জনসাধারনকে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজন। এলাকা ভিত্তিক “পরিবেশ দূত” মনোয়ন করে তাদের নেতৃত্বে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তোলা সম্ভব। গত 16 জুন সকাল ১১.০০ টায় রায়েরবাজার ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট সভা কক্ষে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল এবং আলিফ আইডিয়াল পাবলিক স্কুল এর যৌথ উদ্দ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ডে “পরিবেশ দূত” মনোয়ন করে আবর্জনা পাত্র ব্যবহারে দোকানদারদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি কর্মসূচিতে পূর্ব আলোচনা পর্বে বক্তারা এ অভিমত  ব্যক্ত করেন।   
 
কর্মসূচির সূচনা বক্তব্যে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন বলেন, যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে আমরা পরিবেশ দূষণ করছি। রাস্তার পাশে আবর্জনা পাত্র স্থাপন করা হলেও ময়লা ফেলা হচ্ছে ডাস্টবিনের নিচে কিংবা পাশে। আবার দেখা যায় আবর্জনা পাত্র সংলগ্ন দোকানের জিনিস কিংবা অন্য কোন আবরণ দিয়ে ঢেকে রাখা হচ্ছে। এতে করে আবর্জনা পাত্র স্থাপনের উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে। তিনি মনোনীত পরিবেশ দূতদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের এ শহর বেডরুমের মতই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। তাহলেই আমাদের শহরকে খুব দ্রুত পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।   
 
কমসূচিতে প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, আমাদের দেশ হচ্ছে মায়ের মত। মা-কে আমরা যেমন ভালোবাসি, ঠিক তেমনি আমাদের এই শহরকেও ভালোবাসতে হবে। বিশ্বের দরবারে আজ যে শহর বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকায় নাম লিখিয়েছে আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বাসযোগ্য শহরের শীর্ষের তালিকায় আমরা আসতে পারবো। এজন্য পরিবর্তন আনতে হবে নিজেদের মন-মানসিকতার। শপথ নিতে হবে একটি ময়লাও বাইরে ফেলবো না। 
 
ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম. এ মান্নান মনির বলেন, শহর পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব সকলের। শহরের বাসিন্দা হিসেবে আমাদেরও প্রত্যেকের কিছু দায়িত্ব রয়েছে। নিজের বাড়ির আশপাশ, রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং যেখানে সেখানে আবর্জনা না ফেলা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু আমরা এ দায়িত্ব ঠিকমত পালন করছি না। সকলে দায়িত্বশীল হলে এ শহর পরিষ্কার করা সম্ভব। 
ধানমন্ডি কচি কন্ঠ হাই স্কুলের সংগীত শিক্ষক মো. শওকত আলী এবং আলিফ আইডিয়াল পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক জুয়েল হাসান রাজ বলেন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখার জন্য যতই পদক্ষেপ নেয়া হোক না কেন, যদি আমরা নিজেরা সচেতন না হই তবে তা সফল হবে না। আমাদের প্রত্যেককে নিজ নিজ স্থান থেকে সচেতন হতে হবে এবং যত্রতত্র ময়লা ফেলা থেকে রিবত থাকতে হবে।
 
সভাপতির বক্তব্যে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, আমরা যদি আমাদের এ শহরকে ভালোবাসি তাহলে তাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রত্যেককেই সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে। তিনি পরিবেশ দূত হিসেবে মনোনিত ছাত্র- ছাত্রীদের অভিন্দন জানান। তরুন পরিবেশ দূতের নেতৃত্বে আমরা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শহর আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে দিতে পারবো এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  
 
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অন্যন্যা রহমান, সহকারি এডভোকেসি অফিসার নাঈমা আক্তার এবং স্থানীয় এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ।