English | Bangla
সকলের বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত কর
ঢাকা মহানগরীর পানি ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গৃহস্থালী কাজের এবং পানীয় জলের তীব্র সংকট শুরু হয়েছে। ওয়াসার পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় সংকটের পাশাপাশি এবার যোগ হচ্ছে ময়লা ও দূর্গন্ধযুক্ত পানি। জীবনের অপরিহার্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তিতে নানা দুর্ভোগের কারণে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। এ অবস্থা চলতে থাকলে পানি খাতের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরিভাবে বেসরকারি বহুজাতিক কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। এতে সাধারণের পানি প্রাপ্তি হয়ে আরও দূরূহ হয়ে উঠবে। জীবনযাত্রার অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি পাবে পরিবেশ ও মানবিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি দেখা দেবে সামাজিক নৈরাজ্য। এমতাবস্থায় জলাধার সমূহ দখল ও দূষণমুক্ত করে ও পানি ব্যবস্থাপনায় নৈরাজ্য দূর করে সকলের বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ০৭ মে ২০১৬, শনিবার, সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশন, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ), পল্লীমা গ্রীণ, আইনের পাঠশালা, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটি, গ্রীন মাইন্ড সোসাইটি এবং ইয়থ সান আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে উক্ত দাবী জানানো হয়। 
 
পবা’র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসলাম খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, নাসফের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, পবার যুগ্ম সম্পাদক ড. লেলিন চৌধুরী, পবার সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ, মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য তাসনীম নাঈমা, পল্লীমা গ্রীণের সদস্য সচিব আনিসুল হোসেন তারেক, আইনের পাঠশালার সভাপতি সুব্রত দাস খোকন, পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি বুরহান উদ্দিন আহমদ, গ্রীন মাইন্ড সোসাইটির সভাপতি আমির হাসান, ইয়থ সানের সভাপতি মাকিবুল হাসান বাপ্পী, মো: সেলিম প্রমুখ। 
 
বক্তারা বলেন- এদেশে বিশুদ্ধ ও সুপেয় পানির রয়েছে বিরাট ভান্ডার। কিন্তু যথেচ্ছ ব্যবহার, পরিবেশ দূষণ, জরাধার ভরাট ও অপচয়ের কারণে তা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে। যার প্রভাব পড়ছে নগরবাসীর উপর। জীবনের অপরিহার্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তিতে নানা দুর্ভোগের কারণে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতিতে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। নগরায়ন তথা স্থায়ীত্বশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত পানির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। ভূউপরিস্থ উৎস থেকে আহরণের মাধ্যমে পানির প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে বেশি যতœবান হওয়া আবশ্যক। এই লক্ষ্যে সকল কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা এখন সময়ের দাবি।
 
মানববন্ধন থেকে নিন্মোক্ত দাবীসমূহ করা হয়-
- শুধু বিশেষ এলাকার জন্য নয় সকলের জন্য বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
- নদী, খাল-বিল, লেক, দিঘি-পুকুর, নি¤œাঞ্চল, জলাভূমি দখল, ভরাট ও দূষণ বন্ধে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করা।
- পয়:বর্জ্য পরিশোধন না করে নদী, খাল, বিল বা জলাধারে ফেলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা। পয়:বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।  
- ঢাকা মহানগরীসহ সকল শহরে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে উন্মুক্ত মাটির আঙ্গিনা রাখার বাধ্যতামুলক ভবন নির্মাণ বিধি সন্নিবেশিত করা, বৃষ্টির পানি ধারণের ব্যবস্থা রেখে গৃহায়ন ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা করা। 
- মহানগরীর জনসংখ্যার চাপ কমানোর জন্য গ্রাম ও ছোট ছোট শহরগুলোতে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ব্যবস্থা উন্নতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। 
- ভূগর্ভস্থ পানির রিচার্জের সুযোগ তৈরি করা। ভ্উূপরিস্থ পানির ব্যবহার উপযোগী করা ও ব্যবহার করা এবং ভূগর্ভস্থ স্তরের পানি উত্তোলন পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা।