English | Bangla
সংকট মোকাবিলায় বর্জ্য পানি পুনর্ব্যবহারের আহ্বান

পানির সমস্যা সমাধানে করণীয় প্রসঙ্গে প্রতিবছরের ২২ শে মার্চ বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয়। সেই লক্ষ্যে এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত করা হয়েছে "Water and Waste Water" অর্থাৎ “পানি ও বর্জ্য পানি”। দ্রুত নগরায়ন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিতভাবে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী বর্জ্য পানির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। বর্জ্য পানির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পানি সংকট মোকাবিলা করা যেতে পারে।  ২১ মার্চ ২০১৭ সকাল ১১.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, গ্রীন ভয়েস, আদি ঢাকাবাসী ফোরাম, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্ট, ইকো সোসাইটি, জনস্বার্থ ফাউন্ডেশন, রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্র্সিট, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, ইনিস্টিটিউট অব ওয়েলবিং এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পানির অপচয় রোধ ও পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করা হোক’ এই আহ্বানে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

মানববন্ধনে সূচনা বক্তব্যে এনজিও ফোরাম এন্ড পাবলিক হেলথ্ এর প্রধান এডভোকেসি অফিসার জোসেফ হালদার বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী আজ বর্জ্য পানির আধারে রূপ নিয়েছে। আমাদের অস্তিত্ব রক্ষায় বর্জ্য পানির ব্যবস্থাপনাকে একটি উপায় হিসেবে বিবেচনা করা উচিৎ। যা পানি সংকট মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম এর সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, প্রতিদিন আমরা নানা কাজে পানি ব্যবহার করি। এরমধ্যে কিছু বর্জ্য পানি আছে যা আমরা পুনর্ব্যবহারের চিন্তা করতে পারি। যা আমাদেরকে ক্রমবর্ধমান পানির চাহিদা পূরণে সহয়তা করবে। পাশপাশি শক্তি উৎপাদন ও শিল্প উন্নয়নকেও ত্বরান্বিত করবে।

উন্নয়ন ধারা ট্রাস্ট এর সদস্য সচিব আমিনুল রসূল বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজিতে সবার জন্য সুপেয় পািন নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। শহর ও গ্রামে বর্তমানে ৬০ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানি থেকে বঞ্চিত। বর্তমানে পানির মোট চাহিদার ৭০ শতাংশ মাটির নিচ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমাদের ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, ঢাকা’র চারপাশের চারটি নদী থাকা সত্ত্বেও আমরা সুপেয় পানি বোতল বন্দী। চারপাশের নদীগুলো দূষিত না হলে আমাদের ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীলতার প্রয়োজন পড়তো না।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবীর বলেন, পানি সংকটে নারীদের বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। গবেষণায় দেখা যায়, নারীদের তাদের অধিকাংশ সময় পানি আনতে ব্যয় হয়। পানির অপচয় রোধে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি বর্জ্য পানি পুনর্ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবা’র সাধারন সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, আন্ত:নদী সমস্যা, নদী ভরাট, দখল এবং দূষণের মাধ্যমে পানি সম্পদকে ধ্বংস করা হচ্ছে। ঢাকা’র চারপাশের চারটি নদী থাকা সত্ত্বেও তার পানি ব্যবহার করতে পারছি না। পানি সংকট মোকাবেলায় এখন আমাদের সাড়ে ৩ হাজার কাটি টাকার প্রকল্প নিতে হচ্ছে। সরকারী সংস্থা এবং নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলকে পানি সম্পদ রক্ষায় কাজ করতে হবে। শিল্প কারখানাগুলোকে আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান লিটুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জনস্বার্থ ফাউন্ডেশন এর সভাপতি ডি.এম. সাকলাইন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্র্সিট এর সহকারি গবেষক মহিউদ্দিন, রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির জুয়েল রানা, এনজিও ফোরাম এন্ড পাবলিক হেলথ্ এর সালমা নাসরিন ও সালাহ্ উদ্দিন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অন্যন্যা রহমান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র এর জাতীয় পরিষদের সদস্য জাভেদ জাহান এবং সুবন্ধন সামাজিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ হাবীবুর রহমান প্রমুখ।