English | Bangla
পরিবার ও সমাজে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে গৃহস্থালী কাজের মূল্যায়নের আহ্বাণ

বর্তমানে নারীসমাজ আর্থ-সামজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। দেশের সামাজিক সূচকের সাফল্যের পেছনে নারীর অগ্রগতির ভূমিকা থাকলেও নারীরা আজ নিজ গৃহে অবহেলিত ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। একজন নারী গৃহে যে কাজ করেন তার আর্থিক মূল্য জিডিপির প্রায় দেড়গুণ। নারীর গৃহস্থালী এই কাজগুলো অবমূল্যায়িত হওয়ায় পরিবারে নারী নির্যাতন বন্ধে এখনও ইতবিাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। নারীর প্রতি নির্যাতন কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে গৃহস্থালী কাজের মূলায়নের পাশপাশি পুরুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।  ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, রোজ শনিবার বিকেল ৪.০০ ঘটিকায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর উদ্যোগে ধানমন্ডি লেকের অভ্যন্তরে রবীন্দ্র সরোবরে “নারী নির্যাতন প্রতিরোধে গৃহস্থালী কাজের মূল্যায়ন জরুরী” শীর্ষক লিফলেট ক্যাম্পেইনে বক্তরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
লিফলেট ক্যাম্পেইনে বক্তরা বলেন, প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬ দিন ব্যাপি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। দিবসের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘প্রতিরোধ’, অর্থাৎ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ। গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নারীরা গৃহে যে কাজ করেন তা সরাসরি অর্থ উপার্জনের সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় মনে করা হয় নারীরা কোন কাজ করেন না এবং এ কারণে তারা অবহেলিত হয় এবং নির্যাতনের শিকার হন। নারীরা যদি গৃহস্থালী কাজের অবদানের প্রকৃত মর্যাদা পান তবে এ মাত্রা অনেকাংশে কমে আসবে।
 
বক্তারা বলেন, একজন নারী দৈনিক প্রায় ৪৫ ধরণের গৃহস্থালী কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন যা ছাড়া দৈনন্দিন জীবন অসম্ভব। এমনকি সরাসরি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত নারীরাও গৃহস্থালী কাজ করেন। আমাদের সমাজে গৃহস্থালী কাজ নারীর দায়িত্ব বলে মনে করা হয় এবং কাজগুলো অবমূল্যায়িত থেকে যায়। কিন্তু নারীর প্রতি নির্যাতন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে গৃহস্থালী কাজে নারীর পাশাপাশি পুরুষের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
 
নারীর প্রতি নির্যাতনের ফলে দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাবের পাশাপাশি তাদের শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কাজেই নারী নির্যাতন বন্ধে নারীদের গৃহস্থালী কাজের মূল্যায়ন প্রদান, সামাজিক রীতিনীতি ও আচরনের পরিবর্তনের পাশাপাশি শিক্ষা, সাম্প্রদায়িকতা, অর্থনীতি, কৃষিক্ষেত্র, ব্যবসা, গণযোগাযোগ মাধ্যম ও স্বাস্থ্যখাতে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সর্বপরি নারী ও শিশু নির্যাতন ব্যতীত একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে তোলার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করতে হবে। 
 
লিফলেট ক্যাম্পেইনে উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবীর, ইওডা ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারাল এডভোকেট রোমানা আক্তার ইভা, দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিয়িং এর ইয়থ কো-অর্ডিনেটর ম্যান্ডি ইন্দ্রাণী মুখুটি এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার অনন্যা রহমান প্রমুখ।