English | Bangla
পরিত্যক্ত স্থানকে পার্ক ও শিশু অঞ্চল তৈরির কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন
পার্ক ও খেলার মাঠসমূহ নগরবাসীর সামাজিকীকরণ, বিনোদন, খেলাধুলা, মানসিক প্রশান্তি এবং শরীরচর্চার ক্ষেত্র। কিন্তু ঢাকা শহরের প্রতিটি কমিউনিটিতে পার্ক ও খেলার মাঠ সুনিশ্চিত হয়নি। আবার যে সকল এলাকায় মাঠ-পার্ক রয়েছে সেখানে নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বিশেষ করে ৫ বছরের নিচের বয়সের শিশুদের মাঠ ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। মাঠ ও পার্ক উন্নয়নে ব্যবহারকারীদের বিশেষ করে শিশুদের চাহিদাগুলো উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। এতে করে মাঠ ও পার্কের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, হেল্থব্রিজ-কানাডা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, ব্লক বাই ব্লক এবং ইউএনহ্যাবিটেটের সম্মিলিত উদ্যোগে মিরপুরের পাঁচটি ওয়ার্ডের (২,৪,৫,৭ এবং ৯ নং) ৬ টি স্থানের  পার্ক ও খেলার মাঠগুলোকে সকলের ব্যবহার উপযোগী করে তৈরির জন্য এলাকাবাসীর মাধ্যমে নকশা প্রণয়ন করা হয়। এগুলোর অধিকাংশই পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। যেগুলোকে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় সংস্কার করে ছোট আকারে পার্ক এবং শিশু অঞ্চল তৈরির মাধ্যমে এ শহরের মানুষের নির্মল বিনোদন নিশ্চিত করা সম্ভব। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১৯ নভেম্বর ২০১৯ সকাল ১১.০০টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অনুমোদন সাপেক্ষে ইউএনহ্যাবিট্যাট এর আর্থিক সহযোগিতায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট কর্তৃক মিরপুর ওয়ার্ড ৫ এর বাউনিয়া বাঁধ ঈদগাহ খেলার মাঠ এবং ওয়ার্ড ২ পল্লবীর ৫ ও ৬ নং রোডের দুটি মাঠে শিশু অঞ্চল তৈরির কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
 
বাউনিয়া বাঁধ ঈদগাহ মাঠের বৈশিষ্ট বজায় রেখে একপার্শ্বে ছোট একটি শিশু অঞ্চল এবং ওয়ার্ড ২ পল্লবীর ৫ ও ৬ নং রোডের মাঝে পরিত্যক্ত একটি স্থানে এলাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী বিশেষ করে নারী, বয়স্ক এবং শিশুদের সুবিধার্থে বিভিন্ন খেলার উপকরণ, বসার জায়গাসহ  বৃক্ষরোপন করে ছোট আকারের পার্কে রূপান্তরিত করা হচ্ছে।  
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ড. তারিক বিন ইউসুফ বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে ইতিমধ্যে অনেকগুলো মাঠ পার্কের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি ইউএনহ্যাবিট্যাট এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সহযোগিতায় আরো ৬টি স্থানে এ রকমের ক্ষুদ্র আকারের শিশু অঞ্চল এবং পার্ক তৈরির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ধরনের ছোট আকারের পার্ক এবং শিশু অঞ্চলগুলো নগরবাসীর গণপরিসরের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে। এ কার্যক্রমগুলোর অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে কমিউনিটির অংশগ্রহণ। ডিজাইন থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণে এলাকাবাসী সম্পর্কিত থাকছে। এর আগে রায়ের বাজার বৈশাখী খেলার মাঠে একই প্রক্রিয়ায় উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত করা হয়েছে। যা এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে রক্ষণাবেক্ষণ করছেন। যা সফলভাবে এখনও চলমান রয়েছে। এই স্থান দুটিও একইভাবে সফলতার সাথে চলমান থাকবে বলে আমি আশা করছি। এই প্রক্রিয়া অনুসরন করে আমরা আগামীতে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন মাঠ এবং পার্কের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালিত করবো। 
 
বক্তারা বলেন, ঢাকা মহানগরীতে অনেক এলাকাতেই অন্যতম নাগরিক সুবিধা হিসেবে খেলার মাঠ/পার্ক এর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যা নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে অন্তরায়। এজন্য এলাকা ভিত্তিক ছোট আকারের অব্যবহৃত স্থান চিহ্নিত করে পাবলিক প্লেস তৈরি করা হলে কিছুটা হলেও সমস্যা লাঘব হবে। বর্তমানে আমাদের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলার মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এজন্য খেলার মাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। 
 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন এর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন মিরপুর ওয়ার্ড ৫ এর কমিশনার জনাব আব্দুল রউফ, পল্লবীর ওয়ার্ড ২ এর কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন, ইউএনহ্যাবিট্যাট এর কো-অর্ডিনেটর মোঃ সোহেল রানা, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।