English | Bangla
তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর প্রচলন দ্রুত করার দাবি
মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম প্রধান কারণ ধূমপানসহ তামাক ব্যবহার। প্রতিবছর পৃথিবীতে প্রায় ৮২ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাংলাদেশে প্রতিবছর ১২ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারসহ তামাক ব্যবহারজনিত প্রধান ৮টি রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৫৭ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণায় বলা হয়েছে; বিড়ি-সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যে প্রায় ৪ হাজারেরও বেশী ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে; যার মধ্যে ৪৩ টি সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত। ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনা এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী থাকা আবশ্যক। বিশ্ব ক্যান্সার দিবস ৪ ফেব্র“য়ারি উপলক্ষে  সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা এ কথা বলেন। 
 
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন ‘গ্লোবাল ক্যান্সার অ্যাম্বাসেডর ফর বাংলাদেশ’ আমিনুল ইসলাম সুজন। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, হেলদি এনার্জিটিক একটিভ লাইফ (হিল) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিসেস জেবুন্নেছা, লিও ক্লাব অব ঢাকা ব্লুজ এর প্রেসিডেন্ট লিও জিসান এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট -এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান। 
 
হেলাল আহমেদ বলেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা খরচ খুবই বেশী। এছাড়া প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার সনাক্ত না হলে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করেও রোগীকে বাচানো সম্ভব হয় না। তাই চিকিৎসা ব্যবস্থার চাইতে ক্যান্সার প্রতিরোধকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। ক্যান্সারের অন্যতম কারণ তামাক ব্যবহার। এ লক্ষ্যে তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণ এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে বিড়ি-সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ সতর্কবাণীর প্রচলন দ্রুত করা জরুরি ।
 
এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা। এজন্য ক্ষতিকর তামাক, মাদকের ব্যবহার কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিড়ি-সিগারেটের প্যাকেটে ছবিসহ সতর্কবাণী প্রচলন দ্রুত করা জরুরি। মাদক ব্যবসা ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর সাজা নিশ্চিত করতে হবে। 
 
জেবুন্নেছা শাকের বলেন, ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে সব বয়সী মানুষের শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম ক্যান্সারের ঝুঁিক হ্রাসে সহায়ক। এক্ষেত্রে শহরের সবজায়গায় হাঁটার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। মানুষকে শারীরিক পরিশ্রমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।  
 
লিও জিসান বলেন, লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের উদ্যোগে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ক্যান্সার দিবস পালন করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল লায়ন্স ক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশে কয়েকটি লিও ক্লাব এই দিবস পালন করে থাকে এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো লিও ক্লাব অব ঢাকা ব্লুজ ও লিও ক্লাব অব ঢাকা মিডটাউন প্লাস। 
 
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে মাদকসহ ক্ষতিকর কোমল পানীয়-ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড সামগ্রীর বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ করতে হবে। এজন্য সরকারকে কঠোর হতে হবে। এছাড়া এসব ক্ষতিকর সামগ্রীর ওপর উচ্চহারে কর বাড়াতে হবে। 
 
আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে তামাক ও মাদক ব্যবহার, ফাস্টফুড-জাঙ্কফুড-কোমল পানীয় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তাজা শাকসব্জি ও ফলমূল খেতে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী মানুষকে উৎসাহী করে তুলতে হবে। মানুষতে খেলাধুলা, হাঁটা ও সাইকেল চালনায় উৎসাহী করে তুলতে হবে। এজন্য খেলার মাঠ, পার্ক, ফুটপাথের পরিবেশ উন্নত ও সাইকেল লেন গড়ে তোলার প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে।