English | Bangla
রোগ প্রতিরোধে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠনের আহ্বান

স্বাস্থ্য আমাদের মৌলিক অধিকার। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ এর মূল লক্ষ্য হল রোগ প্রতিরোধ করা। রোগ চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। বাংলাদেশে হৃদরোগ, ষ্ট্রোক, ক্যান্সার, শ্বাসনালীর বাধাজনিত রোগ এবং ডায়বেটিস এই কয়েকটি অসংক্রামক রোগেই প্রায় অর্ধেক মৃত্যু সংঘটিত হয়। সহায়ক পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে এই সমস্ত রোগের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক পরিমাণে হ্রাস করা সম্ভব। এজন্য তামাকজাত পণ্যের উপর স্বাস্থ্য কর হিসেবে সারাচর্জ থেকে প্রাপ্ত অর্থের সদ্ব্যবহার জরুরী। একটি স্বতন্ত্র সংস্থার অধীনে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, তদারকি ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে সেটি সম্ভব। সেক্ষেত্রে “হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন” গঠন জরুরী। ৫ মে ২০১৫ সকাল ১০টায় বাপা কার্যালয়ে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি আইন ও নীতি প্রনয়ণ, মানসম্মত খাদ্যাভ্যাস নিশ্চিত, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং জনসচেনতা প্রয়োজন। বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে প্রতিরোধ ব্যবস্থা প্রাধান্য পাচ্ছে না। তাই রোগ প্রতিরোধে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করা জরুরি।

বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশ অসংক্রামক রোগ (হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়বেটিস) অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামাক ব্যবহার বন্ধ, কায়িক পরিশ্রম বৃদ্ধি, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করার মাধ্যমেই এই রোগগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে তামাকজাত পণ্যের উপর ১% স্বাস্থ্য কর হিসাবে সংগৃহিত সারচার্জের অর্থে রোগ প্রতিরোধে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করতে হবে। হেলথ ফাউন্ডেশনের মূল কাজ হবে কর্মপন্থা নির্ধারণে গবেষণার আলোকে সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলোকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণে পরামর্শ প্রদান, এডভোকেসি কার্যক্রম পরিচালনা, রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান।

বক্তারা উল্লেখ করেন, জাতীয় সংসদ ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে মৃত্যুঘাতি তামাকজাত দ্রব্যের উপর ১% স্বাস্থ্য কর (সারচার্জ) আরোপ করে। তামাকজাত দ্রব্যসহ জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন সব পণ্যের উপর (কোমল পানীয়, অস্বাস্থ্যকর খাবার, প্রাইভেটকার, বোতলজাত পানি ইত্যাদি) সারচার্জ আরোপ করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে হবে। স্বাস্থ্য কর হিসেবে সংগৃহিত অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় হয়ার জন্য হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন দরকার।

সভায় আলোচনা করেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন, নাগরিক উদ্যোগ এর নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ হোসেন, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুুবুল আলম। এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার সৈয়দা অনন্যা রহমান ও জোষ্ঠ্য প্রকল্প কর্মকর্তা নাজনীন কবির, সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা শারমিন আক্তার রিনি, সামিউল হাসান সজিব প্রমুখ।