English | Bangla
আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস-২০১৫ এ সর্বত্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতের দাবি
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস হিসেবে পালিত হয়। এ বছরে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘ওহপষঁংরড়হ গধঃঃবৎং: অপপবংং ধহফ ঊসঢ়ড়বিৎসবহঃ ড়ভ চবড়ঢ়ষব ড়ভ ধষষ অনরষরঃরবং’. আমাদের দেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রতিবন্ধী নাগরিকদের সমাজে সমঅধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে তার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সর্বস্তরে অন্তর্ভুক্ত ও তাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণের পূর্বশর্ত হচ্ছে তাদের জন্য সর্বত্র প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা। অথচ পরিকল্পনায় আজ অবধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা হয়নি। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতকরণ ছাড়া সর্বস্তরে অন্তর্ভুক্তিকরণ ও ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়। সর্বত্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তির  জন্য প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, কর্মক্ষেত্র, রাস্তা পারাপার, শপিংমল, খেলার মাঠ ও পার্কসহ সকল স্থানে প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। 3 ডিসেম্বর 2015 সকাল ১১.০০ টায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত মানববন্ধধন থেকে এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ ধারা ৩৪ এ সকল গণ স্থাপনায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তির আরোহণ, চলাচল ও ব্যবহার উপযোগীর বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও পরিকল্পনায় আমরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সহায়ক কোন অবকাঠামো দেখছি না। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কিভাবে নগরে চলাচল করবে তা কেউ বিবেচনায় নিচ্ছে না। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পক্ষে ফুটওভার ব্রিজে পারাপার সম্ভব নয়। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠিকে ঘর থেকে বের হলেই যানবাহন, রাস্তা পারাপার, কর্মক্ষেত্র সহ বিভিন্ন স্থানে নানা রকমের প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য পরিবহনে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংরক্ষতি আসনের ব্যবস্থা করলেও সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা থাকায় প্রতিব্যক্তিরা তার সুফল পাচ্ছেন না। 
 
বক্তরা আরো বলেন, শহর যদি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব হয় তাহলে সকলের জন্যই নিরাপদ। সুস্থ মানুষ যেমন স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবে, তেমনি শিশু ও বয়স্ক মানুষের চলাচল নিরাপদ হবে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ প্রণয়ন করেছেন। যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার নিশ্চিত এবং তাদের বিকাশের সুযোগ তৈরি। কাজেই সর্বত্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত না হলে এই উদ্দেশ্য যেমন সফল হবে না, তেমনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিক অধিকার নিশ্চিত হবে না। 
 
মানববন্ধন থেকে যাতায়াত সংশ্লিষ্ট নীতি, আইন, পরিকল্পনা, প্রকল্প ও অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও পথচারিদের প্রাধান্য দেওয়া;  প্রশস্ত ও সমতল ফুটপাত এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ফুটপাতের মাঝখানে টেকটাইল্স এর ব্যবস্থা করা; হুইল চেয়ার ব্যবহারকারির জন্য ফুটপাতে ওঠানামার স্থানে ঢালুপথ (র‌্যাম্প) তৈরি করা; নিরাপদে রাস্তা পারাপারের জন্য জেব্রা ক্রসিং, সাইন ও সিগন্যাল লাইট এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য সিগন্যালে শব্দযন্ত্র ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয়। 
 
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা এর যুগ্ম সম্পাদক ও গ্রীণ ভয়েজ এর সমন্বয়ক হুমায়ন কবির, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর তালুকদার রিফাত পাশা, শামিমজাহান, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, আতিকুর রহমান, নাঈমা আক্তার, শারমিন আক্তার রিনি, ফাহমিদা ইসলাম, আয়েশা আরাফাত ইকরা, শুভ কর্মকার প্রমুখ। মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রোগ্রাম কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান লিটু।