English | Bangla
আন্তর্জাতিক শিশু ক্যান্সার দিবস ২০১৬ শিশু ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন

বর্তমানে শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ক্যান্সার। পৃথিবীর ৯০টি দেশের ১৭৮টি জাতীয় সংগঠনের সম্মিলিত মঞ্চ ‘চাইল্ডহুড ক্যান্সার ইন্টারন্যাশনাল’ এর উদ্যোগে ২০০২ সালে এ দিবসটি প্রবর্তিত হয়। শিশুদের ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণ এবং আক্রান্ত শিশুদের নিরাপদ চিকিৎসা ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করতে এ দিবসটির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
 শিশুদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হিমু পরিবহন, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটি, গ্রামীন উন্নয়ন সংস্থা, অরুণোদয়ের তরুন দল, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট যৌথ উদ্যোগে “শিশু ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করা প্রয়োজন” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচী অনুষ্টিত হয়।
কর্মসূচীতে আবু রায়হান, সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আমির হাসান, সভাপতি, গ্রীন মাইন্ড সোসাইটি, আহসান হাবিব মুরাদ, সমন্বয়কারী, হিমু পরিবহণ, আব্দুল কাদের, প্রকল্প সমন্বয়কারী, একলাব, উম্মে সালমা, নির্বাহী পরিচালক, স্বপ্নের সিড়ি, আব্দুল জব্বার, নির্বাহী সচিব, আধূনিক, সুলতানা রাজিয়া, নির্বাহী পরিচালক, এল.আর.বি. ফাউন্ডেশন, হেলাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন, নজরুল ইসলাম সরকার, নির্বাহী পরিচালক, গ্রামীন উন্নয়ন সংস্থা, সৈয়দা অনন্যা রহমান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এবং সমাপনী বক্তব্য রাখেন এ.কে.এম. খলিলুল্লাহ, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, নাটাব ।
আহসান হাবিব মুরাদ বলেন, ক্যান্সার শিশুদের জন্য একটি নীরব ঘাতক হিসাবে চিহ্নিত। পৃথিবীতে ক্যান্সারে আক্রান্ত যত শিশু রয়েছে তার ৯০ভাগই দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে মাত্র ১জন উন্নত চিকিৎসা পায়। ক্যান্সার চিকিৎসা খুবই ব্যয়বহুল। কিন্তু ক্যান্সার প্রতিরোধ করাই কার্যকর এবং সাশ্রয়ী সমাধান। তাই আমাদের ক্যান্সার প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।  
আব্দুল কাদের বলেন, দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। পেডিয়াট্রিক অনকোলজি ন্যাশনাল ডাটাবেইজ (পিওএনডি) সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ১২ হাজার আর সমগ্র দুনিয়ায় ২ লাখের কাছাকাছি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। জিনগত ক্যান্সার ছাড়াও নগরায়নের পরোক্ষ প্রভাবে শিশুদের মধ্যে ক্যান্সারের ঘটনা বাড়ছে। ভাইরাস, দূষণ আর বিকিরণের মাত্রা বৃদ্ধি ক্যান্সারের মূল কারণ। অধিক মাত্রায় অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও উন্নয়ন শিশুদের শরীরে ক্যান্সারের জন্ম দিচ্ছে। তাই সুস্থ  ও ক্যান্সারমুক্ত প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে পরিবেশবান্ধব নগরায়নকে প্রাধান্য দিতে হবে।
হেলাল আহমেদ বলেন, ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের মাত্র ৫ শতাংশ বংশগত সূত্রে জিন মারফত আক্রান্ত হয়। বাকি প্রায় ৯৫ শতাংশ কিন্তু জন্ম পরবর্তীকালে পারিপার্শ্বিক কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষতিকরণ রাসায়নিক নানা খাবার, ফলমূল এবং পানি ও বাতাসবাহিত ভাইরাস ক্যান্সারের পথ প্রশস্থ করে। জিনগত ছাড়াও প্রতিদিন শিশুরা যে খাবার খাচ্ছে বা শ্বাস নিচ্ছে তা থেকেও শরীরে ক্যান্সারের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। মেয়েদের গর্ভাবস্থায় লাইফ স্টাইল ও খাদ্যাভ্যাসের কারণেও শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।
সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে প্রত্যেককেই প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস অর্থাৎ অতিরিক্ত চিনি, লবণ এবং চর্বি বিশেষ করে অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ, কোমল পানীয় পান, অপর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম, দূষণজনিত সমস্যা, ও অত্যধিক মদ্যপান অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে ক্যান্সোরের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।