English | Bangla
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে দু’টি সড়ক বাছাই
ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধিতে যানজট, দূষণ এবং দূর্ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়াও বাইরের গাড়িসমূহও থেকেও এলাকাভিত্তিক গলি সড়কগুলো অতিক্রম করতে গিয়ে স্থানীয়দের জন্য নানা সঙ্কট তৈরি করছে। বাইরে থেকে আসা ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল বন্ধ করে শিশুদের খেলাধূলা, বয়স্কদের অবসর সময় কাটানো এবং সকলের জন্য একটি প্রানবন্ত ও নিরাপদ এলাকা তৈরি করা সম্ভব। এজন্য গবেষণার মাধ্যমে ৩৩ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটি এর তিন নম্বর সড়ক এবং তিনটি শাখাসহ ৩১ নং ওয়ার্ডের রাজিয়া সুলতানা সড়কটি প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়েছে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মাননীয় মেয়র আনিসুল হক এর নিকট এই দুইটি সড়ককে ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত করার প্রস্তাব করা হবে। ওযার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ গবেষণা কার্যক্রমটি সম্পন্ন করেন। ৫ মার্চ ২০১৭ সকাল ১১.০০ টায় মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর উদ্যোগে ৩১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে ‘পথচারীবান্ধব সড়ক সৃষ্টিতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় একথা বলা হয়। সভা শেষে উক্ত সড়ক দুটি সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়।
 
সভায় আলোচকগণ উল্লেখ করেন, ঢাকা শহরে প্রাইভেট কারে ৭ শতাংশ ট্রিপ হয় এবং এজন্য সড়কের সত্তর ভাগ জায়গা দখল করে যানজট সৃষ্টি করে। হাঁটা, সাইকেল, রিকশার সঙ্গে সমন্বয় করে উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হলে প্রাইভেট কারের উপর নির্ভরশীলতা কমানো সম্ভব। এ প্রেরণাকে সামনে রেখে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মত সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস পালিত হয়। এ আয়োজনে মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী পরিবার প্রতি ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি দেন। এ লক্ষ্যে তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবসের আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জনাব আনিসুল হক। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় তিনি ২০১৭ সালের মার্চ মাসের মধ্যে অন্তত একটি সড়ক গাড়িমুক্ত করবেন। তারই ধারাবাহিকতায় এই গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালিত হচ্ছে।
 
প্রবন্ধে গবেষকগণ উল্লেখ করেন, ৩৩ নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটি এর তিন নম্বর সড়কটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪০০মিটার এবং ৩১ নং ওয়ার্ডের রাজিয়া সুলতানা সড়কটি প্রায় ৫৩০ মিটার। দুটি সড়ক মূলত আবাসিক এলাকার মধ্যে অবস্থিত। যেখানে স্থনীয়দের ৭০/৮০টি ব্যক্তিগত গাড়ি রয়েছে। উক্ত গাড়িসমূহ স্টীকার দিয়ে চিহ্নিত করার মাধ্যমে প্রবেশের সুযোগ রেখে বাইরের গাড়িসমূহ চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ আনা হবে। দুটি সড়কের ক্ষেত্রেই বিকল্প সড়ক ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল সম্ভব। এলাকার বাইরের গাড়িগুলোকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া গাড়িমুক্ত সড়কে প্রবেশের অনুমতি দেয়া যাবে না। সড়ক দুটি ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত হলে এ সড়কগুলোতে এলাকার শিশুদের খেলাধুলা, সামাজিকীকরণের সুযোগ হবে। পাশাপাশি বায়ৃদূষণ এবং শব্দদূষণ কমে আসবে। 
আলোচকগণ বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে পার্ক ও খেলার মাঠ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সড়কে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে এলাকাবাসীকে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ করে দেয়া সম্ভব। প্রাথমিকভাবে কিছু সমস্যা হলেও যখন জনগণ এর সুবিধা বুঝতে পারবেন তখন স্বাগত জানাবেন। তবে এ ক্ষেত্রে এলাকাবাসীকেই উদ্যোগী হতে হবে। কারণ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে প্রতি এলাকায় তত্ত্বাবধান করা সম্ভব নয়। প্রাথমিকভাবে ছুটির দিনগুলোতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করে ধীরে ধীরে পরিসর বাড়ানো যেতে পারে। আজকের যে মূল প্রবন্ধ তা দ্রুত ডাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র মহোদয়ের সাথে আলোচনা করা হবে এবং তাঁর সম্মতি পাওয়ার সাথে সাথে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু হবে। 
 
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম অজিয়র রহমান এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন। বক্তব্য রাখেন ৩১ নং ওয়ার্ডের কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম সেন্টু, বাংলঅদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী,  ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী প্রকৌশলী। এছাড়া প্রবন্ধ উপস্থপন করেন াংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী আহমাদ ই. ত্বকী, মো মনিরুজ্জামান, শেফা আরাবিয়া, মো তানজিলুর রহমান, এন এম তানভীর ইমন।