English | Bangla
গৃহস্থালী কাজে নারীর অবদান : আমাদের ভাবনা

নারী ঘরে রান্না করা, ঘর গোছানো, সন্তানের যতœ নেয়া, লেখাপড়ায় সহযোগিতা প্রদান, নৈমত্তিক বাজার করা, কাপড় ধোয়াসহ বিভিন্নরকম কাজ করে। তবু সাধারন নারীরা কোন কাজই করেন নাÑ এমন ধারণা সমাজের সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত। সাথে আরও একটি  ধারণা সবার মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় পরিবারের সকল কাজ নারীর দ¦ারা সম্পাদন করা হবে। এ ধারণা পরিবর্তনে নারীর গৃহস্থালি কাজের গুরুত্ব তুলে ধরতে এবং পরিবারে সবার কাজের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা দিতে “ আমি কিছুই করিনা” ও “একসঙ্গে কাজ করি সুখী পরিবার গড়ি”- দুটি তথ্যচিত্রের প্রচারণা প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। 
 
২৫ জানুয়ারি ২০১৬  ১২টায় ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এবং বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ এর যৌথ আয়োজনে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ অডিটরিয়ামে তথ্যচিত্র প্রচারণা প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবির। সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবা রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ বি এম মাকসুদা আক্তার, প্রফেসর আশরাফুন্নেসা ,অধ্যাপক ইংরেজী বিভাগ, ড: মো : নজরুল ইসলাম,অধ্যাপক পদার্থ বিজ্ঞান, ড: আবেদা সুলতানা,সহযোগী অধ্যাপক,সমাজবিজ্ঞান,প্রফেসর নাজমা শাহীন,বিভাগীয় প্রধান ভূগোল বিভাগ এবং অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষাত্রীবৃন্দ। এছাড়াও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজনীন কবির,সহকারী এডভোকেসী অফিসার তানজিলা চৌধুরী। মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,হেলথব্রিজ এর আঞ্চলিক পরিচালক দেবরা ইফরমসন।
 
অধ্যক্ষ মাহবুবা রহমান বলেন, যে সকল নারী কর্মজীবি তাদের যেভাবে সম্মান দেখানো হয় সমাজে ঠিক একই রকম সম্মান দেখানো হয় না যারা ঘরে কাজ করেন, অর্থনীতিতে উন্নয়নের সবচেয়ে বড় শক্তি নারী, তাই নারীদের সকল কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে। 
,
উপাধ্যক্ষ বি এম মাকসুদা আক্তার বলেন, নারীরা পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে নীরবে অবদান রাখছেÑতার স্বীকৃতি করা দরকার। প্রফেসর আশরাফুন্নেসা বলেন, ঘরে ও বাইরে নারীদের সবসময় কাজের মধ্যে থাকতে হয়। গৃহস্থালি কাজে নারীদের সহযোগিতায় পুরুষদের এগিয়ে আসা উচিত। ড: মো : নজরুল ইসলাম বলেন, সাধারণত একজন পুরুষ মানুষ তার কর্মক্ষেত্রে কাজ করেন আট ঘন্টা আর একজন নারী ঘরে কাজ করেন দৈনিক আঠার ঘন্টা কিন্তু নারীর কাজের স্বীকৃতি দেয়া হয় না, নারীর কাজের স্বীকৃতি টাকার অংকে নয়, সন্মান দিয়ে দেয়া প্রয়োজন। ড: আবেদা সুলতানা বলেন, নারীর গৃহস্থালী কাজের স্বীকৃতি তার অধিকার, সুতরাং তাকে তার প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে, পৃথিবীতে এমন একটি পরিবার পাওয়া যাবেনা যে পরিবারের মূল শক্তি হিসেবে নারীর অবদান নেই। নাজনীন কবির বলেন, যে সকল নারী কর্মজীবি তাদের যেভাবে সম্মান দেখানো হয় সমাজে ঠিক একই রকম সম্মান দেখানো হয় না যারা ঘরে কাজ করেন। দেবরা ইফরমসন বলেন, পৃথিবীতে আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশী দামি আমাদের শিশু, শিশুদের দেখাশোনা আর বয়স্ক মানুষদের সেবা করা থেকে শুরু করে প্রায় সব কাজ করে নারী, এতো কিছুর পর যখন শিশুটিকে বা পরিবারের সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তোমার মা কি করে? শিশুটি বলে আমার মা কিছুই করে না, আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। তানজিলা চৌধুরী বলেন, নারীদের সমস্যাগুলো খুঁেজ তা সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে। শিক্ষায় নারীদের সহায়ক পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। নারীর গৃহস্থালী কাজের স্বীকৃতি তার অধিকার, সুতরাং তাকে তার প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে।