English | Bangla
জনগণ তামাকের সম্প্রসারণ নয়, তামাক নিয়ন্ত্রণ চায়
বাংলাদেশের ৩০% এর অধিক জনগোষ্ঠী তরুণ। বর্তমান এবং আগামী প্রজন্মর সুস্থ্যতা নিশ্চিতে তামাকের সম্প্রসারণ নয়, তামাক নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। বৈদেশিক বিনিয়োগের নামে তামাক কোম্পানীকে দেশে বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ করে দেওয়া হলে একদিকে জনস্বাস্থ্যকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হবে অপরদিকে বিশ্বের দরবারে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ দুপুর ২টায় প্রেসক্লাবের সামনে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠন ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আয়োজিত “তামাকের সম্প্রসারণ নয়, নিয়ন্ত্রণ চাই” শীর্ষক মানববন্ধনে বক্তরা এই মত প্রকাশ করেন। 
 
প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদের সভাপত্বিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার ডা: শামীম যুবায়ের, এসিডি’র প্রজেক্ট কোর্ডিনেটর এহসানুল আমিন, অনুঘটকের নিবার্হী পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম বাবলু, ডাব্লিউবিবি টাস্ট্রেও কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অন্যনা রহমান, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) এর প্রকল্প সমন্বয়কারী একেএম খলিল উল্লাহ, টিসিআরসি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. বজলুর রহমান, অর্ক ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার ডালিয়া দাস, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির এডভোকেসী ও নেটওয়ার্কিং অফিসার এবিকে রেজা প্রমূখ।
 
হেলাল আহমেদ বলেন, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে অন্যতম অন্তরায় তামাকজাত দ্রব্যর ব্যবহার। ক্ষতিকর তামাকজাত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ কোন রাষ্ট্রর কাছেই প্রত্যাশিত হতে পারে না। তামাকের কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশ ১ লক্ষ ৬২ হাজার মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। সারা বিশ্ব যখন তামাকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে এটি নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করছে নানা ধরনের পদক্ষেপ এমন সময় আগ্রাসী জাপান ট্যোবাকোকে আকিজের সাথে মিলে বাংলাদেশ তামাকের বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ করে দেওয়া সত্যি দুঃখজনক। সম্প্রতি ১২ হাজার ৪৩০ কোটি টাকায় আকিজের তামাক ব্যবসা ক্রয় করে জাপান টোব্যাকো বাংলাদেশে সিগারেটের বাজার আরো সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যা দেশের তামাক নিয়ন্ত্রণের অর্জন সমূহকে বাধাগ্রস্থ করবে। 
 
ডা: শামীম যুবায়ের বলেন, আকিজের মাধ্যম জাপান টোব্যাকোকে দেশে বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ করে দেওয়া এবং অপরদিকে মৃত্যু বিপননকারী তামাক কোম্পানীর (ব্রিটিশ আমেরিকান তামাক কোম্পানী) পরিচালনা পর্ষদের ১১ জন পরিচালকের মধ্যে সরকারের বর্তমান সচিব পর্যাযের ৬ জনের অবস্থান রাখা তামাকের আগ্রাসন বৃদ্ধি এবং সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করবে। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে তামাক কোম্পানীর প্রতিনিধিত্ব রেখে, তামাক কোম্পানীগুলোকে বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ কোনভাবেই সম্ভব নয়। বরং এর মাধ্যমে নীতিতে তামাক কোম্পানীগুলোর প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার আরো বিস্তৃতি ঘটবে । 
 
সৈয়দা অন্যনা রহমান বলেন, রাষ্ট্রে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি প্রত্যাশিত হলেও মনে রাখা প্রয়োজন সকল বিনিয়োগ রাষ্ট্রের কল্যাণ বয়ে আনে না। সরকারের দায়িত্ব রয়েছে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে অন্তরায় সৃষ্টিকারী, অর্থনীতি এবং পরিবেশ সকল বিষয়ে ক্ষতিকর পণ্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রধানমন্ত্রীর তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয়, রয়েছে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা, তার কাছে জনস্বাস্থ্যের চেয়ে ক্ষতিকর তামাক কোম্পানীর আর্থিক বিনিয়োগ এর প্রাধান্য কখনোই প্রত্যাশিত নয়।  
 
আনোয়ারুল ইসলাম বাবলু বলেন, সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, এসডিজি অর্জনে সফলতা পেতে, সর্বপরি জনকল্যাণে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় বাস্তবায়নের পাশাপাশি আগ্রাসী তামাক কোম্পানীগুলোর বাজার সম্প্রসারণ নয়, নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। 
 
এছাড়াও বাংলাদেশ কমিউনিকেশন প্রোগ্রাম (বিসিসিপি) এর শামীমুল ইসলাম, প্রজ্ঞা’র কোর্ডিনেটর মো. শাহেদ আলম, তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) এর কর্মকর্তা রাশেদ হোসেন, বাঁচতে শিখ নারী’র কর্মকর্তা সারওয়ার তমিজ উদ্দীনসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা শুভ কর্মকার।