English | Bangla
এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে গাইডলাইন প্রণয়ন করা হবে
তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চুড়ান্ত করেছে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন করেছে। এ কারণে এফসিটিসি ও এর আর্টিকেলসমূহ অনুসরণ করা আবশ্যক।
 
এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ এ তামাক কোম্পানিকে বিভিন্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এফসিটিসির এই আর্টিকেল বাস্তবায়নে নির্দেশনা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও একটি তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণসহ জনস্বাস্থ্য নীতি সুরক্ষায় গাইডলাইন প্রণয়ন করা জরুরি। বিশেষ করে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” প্রত্যয় বাস্তবায়নে আর্টিকেল ৫.৩ অনুসরণ করতে হবে।
২৫ অক্টোবর, ২০১৮ দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে “এফসিটিসির আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা ও করনীয়” বিষয়ক আলোচনা সভায় বক্তরা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
 
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য ও বিশ্বস্বাস্থ্য) মো. হাবিবুর রহমান খান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’র সমন্বয়কারী মো. খলিলুর রহমান, ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর হেড অব প্রোগ্রামস মো. শফিকুল ইসলাম, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র পরিচালক গাউস পিয়ারী প্রমূখ। জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’র প্রোগ্রাম অফিসার আমিনুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান।
 
প্রবন্ধে সৈয়দা অনন্যা রহমান বলেন, এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ এর মূল লক্ষ্য তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে তামাক কোম্পানির প্রভাবমুক্ত রাখতে রাষ্ট্রসমূহকে সহযোগিতা প্রদান। এতে বলা হয়েছে, রাস্ট্রসমুহ তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিতে তামাক কোম্পানীর হস্তক্ষেপ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, তামাক কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ ও যেসব ক্ষেত্রে যোগাযোগ হবে তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, তামাক কোম্পানীর সাথে অংশীদারিত্ব বা শর্তহীন অপ্রয়োগযোগ্য চুক্তি না করা, তামাক কোম্পানী কর্তৃক প্রদানকৃত তথ্যের স্বচ্ছতা ও সত্যতা নিশ্চিত করা, তামাক কোম্পানীর সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় কর্মসূচী নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি
 
মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রনের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা তামাক কোম্পানী। আইন ভঙ্গ করে তাদের আগ্রাসনী প্রচারণা তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে বাধাগ্রাস্থ করে চলেছে। স্বার্থের সংঘর্ষ এড়াতে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
 
মো. খলিলুর রহমান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বেসরকারী সংগঠনগুলো কাজ করছে। এনটিসিসি এ সকল কাজের সমন্বয় সাধন করছে। এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে এনটিসিসি একটি গাইডলাইন প্রণয়নের কাজ করছে। সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে আমরা আশাবাদী।
 
মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, তামাক কোম্পানির বড় টার্গেট তরুণ সমাজ। আমাদের দেশ অস্বচ্ছল হওয়া স্বত্ত্বেও তামাক সেবনে প্রচুর টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। এফসিটিসি তামাক নিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। কিন্তু, এ সম্পর্কে সরকারী কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষের জানার পরিধি না থাকায় এর বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ সম্পর্কে সরকারী কর্মকর্তাদের মাঝে জানার পরিধি বৃদ্ধি ও প্রচারণা বাড়ানো জরুরী।
 
এছাড়া আলোচনা সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট এর প্রতিনিধিবৃন্দ আলোচনা করেন। এছাড়াও তামাক বিরোধী নারী জোট (তাবিনাজ) এর প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।