English | Bangla
সরকারীভাবে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস ঘোষণা ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ই-সিগারেট নিষিদ্ধের দাবী

আন্তর্জাতিক গবেষণায় ই-সিগারেট মারাত্বক স্বাস্থ্যহানিকর প্রমাণিত হওয়া স্বত্ত্বেও তামাক কোম্পানিগুলো মিথ্যাচার করছে এবং তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য কিশোর ও তরুণদের হাতে ই-সিগারেট তুলে দিয়ে দেশে অবাধ ব্যবসার সুযোগ দাবী করছে। যুব সমাজকে নেশার করাল গ্রাস থেকে সুরক্ষা ও তাদের সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিতে অবিলম্বে বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের ২০৪০ সালের মধ্যে “তামাকমুক্ত বাংলাদেশ” বাস্তবায়ন গতিশীল করতে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের পাশাপাশি ০৯ অক্টোবরকে সরকারীভাবে ‘জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস’ ঘোষণা এবং পালন করতে হবে।

০৯ অক্টোবর ২০১৯ সকালে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। কর্মসূচি শেষে বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ও ‘জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস’ ঘোষণার দাবীতে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল’র সমন্বয়কারী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

কর্মসূচির সহযোগী আয়োজক ছিলো এইড ফাউন্ডেশন, এসিডি, আর্ক ফাউন্ডেশন, বিসিসিপি, ক্যাব, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, নাটাব, প্রত্যাশা, টিসিআরসি, ইপসা ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট। “বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা হোক” এই প্রতিপাদ্যে এবারের জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস পালন করছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ওঅন্যান্য তামাক বিরোধী সংগঠনসমূহ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ২০১১ সাল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যরত সংগঠনগুলো সারাদেশে নানান কর্মসূচির মাধ্যমে ৯ অক্টোবর “জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস” পালন করে আসছে। এ বছরও সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

কর্মসূচিতে প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র পরিচালক ছট্কু আহমেদ, বিসিসিপি’র উপ-পরিচালক শামীমুল ইসলাম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈয়দা অনন্যা রহমান, ইপসা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. নাজমুল হায়দার, নাটাবের প্রকল্প সমন্বয়কারী একেএম খলিল উল্লাহ, পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি আমির হাসান, বাপা’র জাতীয় কমিটির সদস্য মো. নাজিমুদ্দিন প্রমূখ। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন আর্ক ফাউন্ডেশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল।

অনুষ্ঠানে শামিমুল ইসলাম বলেন, ভারত ইতোমধ্যে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করেছে এবং আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে এটি বন্ধের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। “ই-সিগারেট”ও মারাতœক স্বাস্থ্যহানিকর পণ্য। তামাক কোম্পানিগুলোর মিথ্যাচরের ফলে আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে ই-সিাগরেটের ব্যবহার আশংকাজনক হারে বাড়ছে। যা আমাদের জন্য অশনিসংকেত।

ছট্কু আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অনেক উদ্যোগ প্রসংসনীয়। ই-সিগারেট নিয়ন্ত্রণেও আমরা বিশ্বে নজীর স্থাপন করতে পারি। এতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা নেশা থেকে রক্ষা পাবে।
 
হেলাল আহমেদ বলেন, সরকারের গৃহীত নীতিগত পদক্ষেপগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে সুদৃঢ় করেছে। কিন্তুু, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহিত উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত ও অর্জনসমূহকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে তামাক কোম্পানিগুলো। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম এবং সহায়ক নীতিসমুহ সুরক্ষা, ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে তামাক কোম্পানিগুলোর অপচেষ্টা বন্ধ করা, ৯ অক্টোবর জাতীয় তামাকুমক্ত দিবস ঘোষণা ও তরুণ জনগোষ্ঠির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ জরুরী।

গাউস পিয়ারী বলেন, বাংলাদেশে ই-সিগারেটের ব্যবসা বাড়াতে বিভিন্নভাবে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তামাক কোম্পানিগুলো। তামাক কোম্পানিগুলোকে কোনভাবেই ই-সিগারেট বানিজ্যের সুযোগ দেয়া উচিৎ নয়। বরং ব্যাপকভাবে চালুর আগেই এটিকে নিষিদ্ধ করা না হলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।