English | Bangla
পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় দৃশ্যমান আতঙ্ক তামাক
বিশ্বব্যাপী তামাক সরবরাহ চেইন জলবায়ু পরিবর্তনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। ধূমপানের ফলে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন এবং অন্যান্য বিষাক্ত রাসায়নিক ও বায়ু দূষণকারী পদার্থ বায়ুমন্ডলের পরিবেশ দূষণ ঘটায়। বাংলাদেশে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু এবং ১২ লক্ষাধিক মানুষের বিভিন্ন দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ তামাক। প্লাস্টিকের থলি বা পাউচে নির্বিচার ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার ও সরবরাহ বেশ কয়েকটি দেশে পরিবেশ ধ্বংসে অন্যতম প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।
 
পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকান্ড বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়ে আজ সকাল ১১:০০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) যৌথভাবে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কৈবর্ত সভা কক্ষে “পরিবেশ রক্ষায় এবং খাদ্য সংকট মোকাবেলায় তামাক নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক একটি মতবিনিময় সভা আয়োজন করে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান, আবু নাসের খান এর সভাপতিত্বে এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের স্বাস্থ্য অধিকার বিভাগের প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট’র প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য। সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ঢাকা ডিসি অফিস) জুবায়ের হোসেন, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এড. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সিটিএফকে’র গ্র্যান্ড ম্যানেজার আব্দুস সালাম এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ।
 
হোসেন আলী খোন্দকার বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মাটির উর্বরতা বৃদ্ধির জন্য তামাক চ্াষ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত হওয়ার দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য জেলা প্রসাশনকে আহবান জানান।  
 
সভায় উপস্থিত সম্মানিত অতিথিগণ বলেন, বাংলাদেশে পরিবেশ ধ্বংসকারী বিদেশী তামাক কোম্পানীর বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি তামাক চাষের উপরে অতিরিক্ত করারোপ ও পরিবেশ উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় বাস্তবায়নে সাপ্লাই চেইন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তামাক চাষ নীতি চুড়ান্ত করা জরুরী। পরিশেষে বক্তারা এফসিটিসি ৫.৩ এর আলোকে কোড অব কন্ডাক্ট প্রণয়নের জোর দাবি জানান। 
 
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, তামাক চাষের ফলে আশেপাশের কোনো ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয় না যা খাদ্য সংকট সৃষ্টি করছে। তামাক কোম্পানী কর্তৃক বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড আদতে তামাক কোম্পানীর কৌশলমাত্র। মনিটরিং এর মাধ্যমে তামাক  প্রক্রিয়াজাতকরণে গাছ কর্তন রোধে আইন প্রণয়ন করতে হবে। ই-সিগারেট ও ধোঁয়াবিহীন তামাক উৎপাদনে ব্যবহৃত ধাতু, প্লাস্টিক ও ব্যাটারি বর্জ্য বাড়িয়ে তুলছে যা পরিবেশ ও প্রকৃতির জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। বক্তারা আরো বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে তামাক বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিশেষে তারা তামাক কোম্পানীতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
 
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- এইড ফাউন্ডেশন, ডাস্, স্টপ, মানস, আইডিএফ, উবিনীগ, কসমস, হিল, তৃনমূল উন্নয়ন সংস্থা, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, নবনীতা মহিলা কল্যান সমিতি, লালু পঞ্চায়েত, শিল্ড, একটিভ স্যোসাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, সুজন, সার্প, সাস, ইনস্টিটিউড অব ওয়েলবীয়ীংসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ।