English | Bangla
তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রধান প্রতিবন্ধকতা

সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গৃহীত জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন বিষয়ক কার্যক্রমসমুহকে ধারাবাহিতভাবে বাধাগ্রস্থ করছে তামাক কোম্পানিগুলো। তামাক কোম্পানিগুলো এ ধরনের সুযোগ পাচ্ছে তার অন্যতম প্রধান কারণ তামাক কোম্পানিতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার । জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস ২০২২ উপলক্ষে আজ ১৩ অক্টোবর ২০২২, সকাল ১১.০০ টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) সহ  মোট ১২ টি সংগঠনের উদ্যোগে “তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রধান প্রতিবন্ধকতা বিষয়ক একটি অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। 

কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কান্ট্রি ম্যানেজার নাসিরউদ্দিন শেখ, এইড ফাউ›েডশনের প্রকল্প কর্মকর্তা আবু নাসের অনিক, বিএনটিটিপির প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলীল, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার অদূত রহমান ইমন, মানস’র প্রকল্প কর্মকর্তা আবু রায়হান, ডাস’র সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন , কেএইচআরডিএস’র নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা শামীমা সুলতানা, নবনীতা মহলিা কল্যান সমতিরি নির্বাহী পরিচালক আতিকা হোসেন, ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (আইডিএফ) ’র চেয়ারম্যান এস. এম. শফিঊল আজম, টিসিআরসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা, শিশুদের মুক্তবায়ু সেবন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোঃ সেলিম ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্য রহমান।  

বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটিতে বক্তারা বলেন, একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতা তামাক কোম্পানিগুলোতে সরকারের বিদ্যমান শেয়ার। ধোঁয়াযুক্ত এবং ধোঁয়াবিহীন তামাকের কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তামাকের ভয়াবহতা থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সম্প্রতি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু তামাক কোম্পানীগুলো অতীতের ন্যায় এক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। উল্লেখ্য শুধু আইন সংশোধন নয়, ইতোপূর্বে তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক মাধ্যম যেমন কর বৃদ্ধি, আইন বাস্তবায়ন, সারচার্জ আরোপ, লাইসেন্সিং ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। কোম্পানিগুলোর এধরনের কার্যক্রম সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে বাঁধাগ্রস্থ করছে। দ্রুত তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহতকরণে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।

উন্নত বিশ্বে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য গ্রহণ করা হচ্ছে নানামুখী পদক্ষেপ। ডেনমার্কে ২০১০ সালে জন্ম নেওয়াদের কাছে সিগারেট বিক্রি বন্ধ হচ্ছে। ভুটান নিজ দেশে সিগারেট বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে। থাইল্যান্ড তামাক কোম্পানীর প্রভাব থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণ সুরক্ষিত রাখতে ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন গঠন করেছে। বাংলাদেশ তামাক নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করলেও তামাক কোম্পানীর নীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধে সেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে তামাক কোম্পানিগুলো ধারাবাহিকভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করে আসছে। বর্তমান অবস্থায় ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধন ও যুগোপযোগী করার পাশাপাশি তামাক কোম্পানী থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহার এবং নীতিসমুহ সুরক্ষায় এফসিটিসির আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।