English | Bangla
কৃষক ও ভোক্তার দূরত্ব হ্রাসে লালমাটিয়ায় কৃষকের বাজার উদ্বোধন

ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ খাদ্য এবং কৃষকদের পণ্যের সঠিক মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিতে কৃষকের বাজার একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। ঢাকা শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার গড়ে তোলা হলে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালীকরণে ভূমিকা রাখা সম্ভব।
আজ ১১ নভেম্বর ২০২২ সকাল ৯.০০টায় নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডে লালমাটিয়ার বি ব্লকে মহিলা কলেজের পিছনের রাস্তায় কৃষকের বাজারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। এ বাজারে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাভারের তেঁতুলঝোড়া থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষী তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল বিক্রি করবেন।  
কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টন। উদ্বোধনী আয়োজনে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সাভারের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন ভূঁইয়া, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টন বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত নিরাপদ পণ্য সরাসরি ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে কৃষকের বাজারের আয়োজন। আমরা সফল হলে মধ্যস্বত্বভোগী নয়, বরং কৃষকরা লাভবান হবে। তারা নিরাপদ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ব্যবহার করে আমরা মাটি, পানি দূষণ করছি। অন্যদিকে অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে ব্যক্তি ও রাষ্ট্র পর্যায়ে চিকিৎসার খরচ বাড়ছে। এলাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ আপনারা বাজারটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সহায়তা করবেন।
সাভারের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের কৃষি জমির পরিমাণ কম হওয়া স্বত্বেও উৎপাদনে আমরা এগিয়ে আছি। এখন আমরা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে জোর দিয়েছি। কীটনাশক ছাড়া কৃষিতে উৎপাদন সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিটি কীটনাশকের অপেক্ষমান কাল এবং শ্রেণীবিভাগ আছে। সে অনুযায়ী আমাদের কৃষকরা ফসল উৎপাদন করে। এছাড়াও জৈব কীটনাশক ব্যবহার করে। আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি এ বাজারের সকল পণ্য নিরাপদ।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ফুড সিস্টেম পলিসি ইকনোমিস্ট পেদ্রো আন্দ্রেস গার্জন ডেলভো বলেন, কৃষকের বাজারকে আমরা নতুনভাবে নগর এলাকায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। মানুষ নিরাপদ খাদ্য পেতে আগ্রহী। তাদের নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে আজকের বাজারটি উদ্বোধন হলো।
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, ১০ জন কৃষক দিয়ে সমগ্র এলাকাবাসীর নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। কিন্তু এ বাজারটি একটি মডেল, যা সহজেই অন্য এলাকায় অনুসরণীয়। অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণ চিকিৎসা ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভর্তুকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। নিরাপদ খাদ্য গ্রহণে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি এ বাজারের মাধ্যমে কৃষকের মর্যাদা এবং পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি উভয়েই নিশ্চিত করা সম্ভব।
আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ৩২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক কামরুজ্জামান আজাদ, ১ নং ইউনিট ৩২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম, ১ নং ইউনিট ৩২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন রাজু, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটির সদস্য জনাব মহসিন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের জেন্ডার এন্ড নিউট্রিশন স্পেশালিস্ট মাসুমা চৌধুরীসহ আরো অনেকে।